শেষ দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাধা ছিলেন রস টেইলর। দিনের শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেট বাংলাদেশকে এনে দিলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি। এই ম্যাচে দলের চাওয়া যেমন পূরণ করলেন তিনি, তেমনি অবসান হলো দেশের ক্রিকেটের দীর্ঘদিনের এক অপেক্ষারও।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের শেষ দিন সকালে টেইলরকে আউট করে ইবাদত পূর্ণ করলেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার প্রথম তো বটেই, প্রায় ৯ বছর ও ৪৭ টেস্ট পর টেস্টে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন বাংলাদেশের কোনো পেসার।
ইবাদত থামেননি সেখানেই। পরের ওভারেই ফিরিয়ে দেন কাইল জেমিসনকে। পরে তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে শেষ করে দেন নিউ জিল্যান্ড ইনিংস। ইবাদত ততক্ষণে পৌঁছে যান রেকর্ড উচ্চতায়।
৪৬ রানে ৬ উইকেট তার, দেশের বাইরে বাংলাদেশের কোনো পেসারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
দেশ-বিদেশ মিলিয়ে তার চেয়ে ভালো বোলিং ফিগার আছে কেবল আরেকজন পেসারের। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।
২০১৩ সালে এপ্রিলে জিম্বাবুয়ে সফরে পরপর দুই টেস্টে অসাধারণ সুইং বোলিংয়ের প্রদর্শনীতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন রবিউল ইসলাম। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো পেসার পারছিলেন না এই মাইলফলক ছুঁতে।
এই সময়টায় ৩ দফায় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ চৌধুরি, দুবার করে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। কিন্তু ৫ উইকেট আর হচ্ছিল না। অবশেষে ইবাদতের হাত ধরে কাটল সেই খরা।
অথচ এই টেস্টের আগে তার উইকেট ছিল ১০ টেস্টে স্রেফ ১১টি। বোলিং গড় ছিল ৮১.৫৪, ১০টির বেশি উইকেট শিকারিদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে গড় যা। সেই তিনিই এবার উপহার দিলেন অসাধারণ বোলিং।
ইবাদতের এই স্বপ্নযাত্রা শুরু হয় চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনে। টানা ৯ ওভারের স্পেলে ২৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। এরপর শেষ সেশনে অসাধারণ এক স্পেলে তিনি ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়ই। ৭ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেন ওই স্পেলে। সব মিলিয়ে স্পেলটি ছিল ৭-৩-১৫-৩।
৪ উইকেট নিয়ে শেষ দিন শুরুর পর আরেকটি উইকেটের জন্য অপেক্ষা খুব একটা করতে হয়নি। দিনের দ্বিতীয় আর নিজের দ্বিতীয় বলেই ধরা দেয় সেই উইকেট। ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন অভিজ্ঞ টেইলরকে। ষষ্ঠ শিকার জেমিসন আউট হন শর্ট মিড উইকেটে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে।
বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আগে ছিল স্রেফ ৪ জন পেসারের। সর্বোচ্চ ৪ বার নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন, রবিউল ইসলাম ২ বার। একবার করে মঞ্জুরুল ইসলাম ও রুবেল হোসেন।
নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের কোনো পেসারের ৫ উইকেট ছিল একটি। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে বেদম মার খেয়ে ১৬৬ রানে ৫ উইকেট নিতে পেরেছিলেন রুবেল হোসেন। ইবাদত এবার তাকে পেছনে ফেললেন অনেকটা ব্যবধানে।
প্রথম ইনিংসে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছিলেন তরুণ ডানহাতি ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। ওপেনিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসে ২২৮ বলে ৭৮ রান করে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। কিন্তু হাতের ইনজুরিতে এই সফরে আর ব্যাট হাতেই নামা হবে না। ফিল্ডিংয়ের সময় ডান হাতের আঙুলে চোট পান এই ওপেনার। সেলাই লেগেছে তিনটি। বিসিবির সরবরাহকৃত ভিডিওবার্তায় জয়ের চোটের ব্যাপারে চতুর্থ দিনের খেলা শেষে এমনটাই জানিয়েছেন দলের ফিজিও বায়েজিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, 'মাহমুদুল হাসান জয় আজকে ফিল্ডিং করার সময় ডানহাতের ইনজুরিতে পড়েছে। হাতের তৃতীয় ও চতুর্থ আঙুলের মাঝে তিনটি সেলাই লেগেছে। এখানের ডাক্তার সেলাই করে দিয়েছেন। ওকে এখন ৭ থেকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণে থাকতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে।'
আজ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে ৫ উইকেটে ১৪৭ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে নিউজিল্যান্ড। দিনশেষে উইকেটে ৩৭ রানে অপরাজিত আছেন রস টেলর। তার সঙ্গে ৬ রানে আছেন রাচিন রবীন্দ্র। ১৭ রানে এগিয়ে আছে টম ল্যাথামের দল।
ড্রাফটের আগেই দেশের ৬ ক্রিকেটার ও বিদেশি অনেককে নিশ্চিত করে ফেলেছিল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলি। ড্রাফটে তারা আরও গুছিয়ে নিয়েছে দল। মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে তামিম ইকবাল ও মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে চমক দিয়েছে ঢাকা। ড্রাফটের আগেই কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স দলে নেয় বিদেশি তিন বড় ক্রিকেটাররা। সাকিব আল হাসান ও ক্রিস গেইলকে ড্রাফটের আগেই নেওয়া ফরচুন বরিশাল দল আরও সমৃদ্ধ করেছে ড্রাফটে।
ড্রাফটেই অবশ্য দল গোছানো শেষ নয়। ড্রাফটে দল না পাওয়া ক্রিকেটাদের নেওয়ার সুযোগ আছে সব দলেরই। প্রতি দলের স্কোয়াডে সর্বোচ্চ ১৪ জন দেশি ও ৮ জন বিদেশি নিতে পারবে প্রতি দল। মোট ২২ জনের স্কোয়াড পূরণ হয়নি এখনও কোনো দলেরই।
ড্রাফট শেষে দেখে নেওয়া যাক, কোন দলের চিত্র কেমন দাঁড়াল।
এবার নিজেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়ার ঘোষণা দিলেন আকরাম খান। সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার পারিবারকে সময় দিতে গিয়েই এমন সিদ্ধান্তের দিকে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে নিজ বাসায় সংবাদকর্মীদের আকরাম খান অবশ্য বলেছেন, বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে কথা বলেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত নেবেন।
গত কয়েকদিন হলো দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে আকরামের ক্রিকেট অপারেশনস পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর গুঞ্জন ছড়িয়েছে। এর মধ্যে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে আকরাম খানের স্ত্রী সাবিনা আকরাম এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে সেই গুঞ্জনের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি লিখেন, ‘ক্রিকেট অপারেশনস ছেড়ে দিচ্ছে আকরাম খান’।
এ বিষয়ে অবশ্য আকরামের বক্তব্য মিলছিল না। শেষ পর্যন্ত মঙ্গলবার বিকেলে গণমাধ্যমকর্মীদের মুখোমুখি হন আকরাম। এসময় তিনিও একই কথাই বলেছেন।
পরিবারের কারণেই এই সিদ্ধান্ত— এমনটি জানিয়ে আকরাম খান বলেন, আমি পারিবারিকভাবে একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। পরিবারকে বেশি সময় দিতেই এ সিদ্ধান্ত।
বিসিবি সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি গত আট বছর ধরে ক্রিকেট অপারেশনসে আছি। এখানে আমার অভিভাবক বোর্ড সভাপতি (বিসিবি সভাপতি)। গত আট বছরে আমি তার কাছ থেকেই সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা পেয়েছি। ভালো-খারাপ দুই সময়েই তিনি আমার পাশে ছিলেন। আমি তার সঙ্গে আলাপ করে হয়তো কালকের মধ্যে (আগামীকাল, বুধবার) আমি আমার সিদ্ধান্ত আপনাদের জানিয়ে দেবো।
সিদ্ধান্তটা কেবল পারিবারিক কারণে নাকি অন্য কোনো বিষয় আছে— সংবাদকর্মীদের এমন প্রশ্নের জবাবে আকরাম খান বলেন, আমি অনেক বছর ছিলাম এই জায়গাটিতে। মানসিক বলেন আর শারীরিক বলেন— এটি (দীর্ঘ সময় দায়িত্ব পালন) আসলে কঠিন। এসব কারণেই একটা ব্রেক প্রয়োজন।
বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন পদ না ছাড়ার পরামর্শ দিলে কী করবেন— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তো এখনই বলতে পারছি। আমি আসলে উনার সঙ্গে কথা বলেই আপনাদের জানাব।
আকরাম খান বোর্ডের ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির নেতৃত্বে আছেন দীর্ঘদিন। ২০১৪ সালে প্রথমবার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব পান তিনি। পরের বছর নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কাছে চেয়ার হারান আকরাম। এরপর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফের ক্রিকেট অপারেশনসের প্রধানের চেয়ারে বসেন তিনি।
ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন সময়েই আলোচিত-সমালোচিত হয়েছেন আকরাম খান। আইপিএলের সময় সাকিব আল হাসানের ছুটি চাওয়া ইস্যুতে সমালোচনা ছড়িয়েছিল। সাকিব এক পর্যায়ে মন্তব্য করেন, আমার ছুটির আবেদন হয়তো পড়েই দেখেননি ক্রিকেট অপারেশনস চেয়ারম্যান। আকরাম খানের কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রশ্ন তোলেন তৎকালীন গেম ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বর্তমানে টিম ডিরেক্টর খালেদ মাসুদ সুজনও।
মহান বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দিতে সাঁতরাচ্ছেন ৭৯ সাঁতারু। তাদের সঙ্গে অংশ নিয়েছে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লারিসা রোজেন (১০)। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১০টায় কক্সবাজারের টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া সমুদ্র সৈকত থেকে সাঁতার শুরু করেছেন তারা।
লারিসার সঙ্গে সাঁতারে অংশ নিয়েছেন তার বাবা সৈয়দ আক্তারুজ্জামান ও বড় ভাই সৈয়দ আরবিন আয়ান। দুই সন্তানের সঙ্গে অংশ বাংলা চ্যানেলে সাঁতারে অংশ নেওয়াটাও একটা রেকর্ড।
১৬তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারের আয়োজন করেছে ষড়জ অ্যাডভেঞ্চার ও এক্সট্রিম বাংলা। এবারের ৭৯ জন সাঁতারুর মধ্য একজন বিদেশি ও এক নারী রয়েছেন। সাঁতরে ১৬ দশমিক ১ কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে পাড়ি জমান তারা। এ সময় দ্বীপের বাসিন্দারা তাদেরকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান।
আয়োজক ও দ্বীপের বাসিন্দারা জানান, বেলা পৌনে ১১টায় সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে বাংলা চ্যানেলে সাঁতার শুরু করেন ৭৯ সাঁতারু। এর আগে সবাই দেশের পতাকা দেখিয়ে উল্লাস করেন। পথে কোনও সমস্য না হলে দুপুরে একে একে দ্বীপে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
এবার ১৮ বার বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার রেকর্ড গড়বেন ষড়জ অ্যাডভেঞ্চারের নির্বাহী কর্মকর্তা লিপটন সরকার। তিনি বলেন, চ্যানেল সাঁতারের আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে আয়োজন করা হয়েছে। সাঁতারুরা ফ্রি হ্যান্ড সুইমিং করবেন। নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেক সাঁতারুর সঙ্গে একটি করে উদ্ধারকারী নৌকা থাকবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের সার্ভিস বোট, জরুরি নৌকা ও ডুবুরি থাকবেন।
লিপটন সরকার জানান, এবার সর্বোচ্চ ৮০ জন সাঁতারু অংশ নেবেন। গত বছর ৪৩ জন সাঁতারু অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে ৩৯ জন সফল হন। এবারও একজন বিদেশি সাঁতারু অংশ নিচ্ছেন। আমরা বাংলা চ্যানেল সাঁতারকে আন্তর্জাতিক করতে পেরেছি। গতবারের চেয়ে এবার প্রায় দ্বিগুণ সাঁতারুর অংশগ্রহণ বলে দিচ্ছে, বাংলাদেশে দূরপাল্লার সাঁতার জনপ্রিয় হচ্ছে।
১৬তম বাংলা চ্যানেল সাঁতারের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের ব্র্যান্ড ফরচুন। রেসকিউ পার্টনার হিসেবে রয়েছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড। অংশীদার হিসেবে আরও আছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড, ইউনাইটেড সিকিউরিটিজ, সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক লিমিটেড, ষড়জ, ভিসা থিং ও স্টুডিও ঢাকা।
প্রসঙ্গত, টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথের স্রোতোধারার নাম ‘বাংলা চ্যানেল’। অ্যাডভেঞ্চার গুরুখ্যাত প্রয়াত কাজী হামিদুল হক সমুদ্র সাঁতারের উপযোগী বঙ্গোপসাগরের এই চ্যানেল আবিষ্কার করেন। ২০০৬ সালে প্রথমবার আয়োজনে বাংলা চ্যানেল পাড়ি দেন লিপটন সরকার, ফজলুল কবির ও সালমান সাঈদ।
স্পেনের ক্লাব বার্সেলোনা থেকে লিওনেল মেসিকে কিনতে গিয়েই পিএসজির খরচ হয়েছে ৪ কোটি ১০ লাখ ইউরো।
বর্তমানে দল চালাতে পিএসজির মোট খরচ ৩০ কোটি ইউরো। প্রতি বছর এই বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছে ক্লাবটি।
কারণ কোনও ক্লাব এক মৌসুমে কত টাকা খরচ করে সেই হিসেব থাকে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রন সংস্থা ফিফার কাছে। আয়-ব্যায়ের হিসেবে কোনও গরমিল থাকলে ক্লাবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিতে পারে ফিফা। তাই ঝুঁকি নিতে চাইছে না পিএসজি।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসিকে ক্লাবে রাখতে গিয়ে আগামী জানুয়ারিতে ট্রান্সফার উইন্ডোতে দলের তারকা ৭ ফুটবলারকে ছাড়তে হতে পারে পিএসজি।
তবে কোন কোন ফুটবলারকে ছেড়ে দেবে তা এখনও নিশ্চিত করেনি পিএসজি।
তারকা দম্পতি বিরাট কোহলি ও আনুশকা শর্মা তাদের চতুর্থ বিয়েবার্ষিকী উদযাপন করেছেন শনিবার। বিশেষ দিনে ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসায় সিক্ত তারা। শুভেচ্ছার জবাবও দিয়েছেন।
ভারতে সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রিয় জুটির মধ্যে বিরাট-আনুশকা দম্পতি অন্যতম। দেশের বাইরেও তাদের নিযুত ভক্ত-অনুরাগী রয়েছে। তাদের যে কোনো বিষয়ে আগ্রহ রয়েছে মানুষের।
সেলিব্রিটিদের নিরাপত্তার দিকটিও মাথায় রাখতে হয়। কারণ যে কোনো স্থানে গেলে তাদের ঘিরে ধরেন লোকজন। বিরাট আনুশকার দম্পতির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন প্রকাশ সিং আকা সনু। তাকে প্রায়ই এই দম্পতির সঙ্গে দেখা যায়। এই দেহরক্ষীর জন্য বড় অংকের মাইনে গুনতে হচ্ছে বিরাট-আনুশকাকে।
ভারতের জনপ্রিয় বিনোদনভিত্তিক ওয়েবসাইট ডিএনের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ক্রিকট্র্যাকার্সের খবরে সনুর বেতনের বিষয়টি উঠে এসেছে। তার বেতনের অংকের কথা শুনলে যে কারও চোখ ছানাবড়া হয়ে যাবে।
আনুশকা তাকে বছরে ১ কোটি ২০ লাখ রুপি বেতন দেন। ভারতের বড় বড় কোম্পানির সিইওরা এই বেতন পান না।
সনু গত কয়েক বছর ধরেই আনুশকার সঙ্গে রয়েছেন। ২০১৭ সালে ক্রিকেটার বিরাট কোহলিকে বিয়ে করার আগ থেকেই সনু আনুশকার নিরাপত্তা দিয়ে আসছেন। বিয়ের পর থেকে আনুশকার পাশাপাশি বিরাটের নিরাপত্তাও দিয়ে আসছেন সনু।
বিরাট-আনুশকা বাইরে বেরোলেই সনু তাদের সঙ্গী হন। এটি বলার অপেক্ষা রাখে না, এই দেহরক্ষী আনুশকার পরিবারের খুবই বিশ্বস্ত। আনুশকা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পরও তাকে সর্বোচ্চ সাপোর্ট দিয়েছেন সনু। গত জানুয়ারি মেয়ে সন্তানের বাবা-মা হন বিরুষ্কা। এর পর থেকে ভামিকার নিরাপত্তার দিকটিও দেখছেন সনু।
টি-টোয়েন্টির পর এক দিনের ক্রিকেটেও ভারতীয় দলের নেতৃত্ব খোয়ালেন বিরাট কোহলি। তবে ক্রিকেটের ক্ষুদ্র সংস্করণের সময় নিজেই জানিয়েছিলেন নেতৃত্ব ছাড়ার কথা। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর যে ভারতকে এই ধরনের ক্রিকেটে আর নেতৃত্ব দেবেন না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু এক দিনের ক্রিকেটের ক্ষেত্রে তেমনটা হলো না। ভারতীয় বোর্ডের পক্ষ থেকে জানানো হলো, সাদা বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে রোহিত শর্মাকে।
এমনিতে বুধবার একেবারে আড়ম্বরহীনভাবে বিরাটকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে বিসিসিআই। এমনকি পৃথকভাবে কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশও করা হয়নি। দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট সিরিজের জন্য দল ঘোষণার বিজ্ঞপ্তিতেই নিচে এক বাক্যে জানানো হয়েছে, আগামী দিনে একদিন এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারতের অধিনায়ক হচ্ছেন রোহিত। তাতে বিরাটের নামও নেয়া হয়নি। সাফল্যের সাথে (পরিসংখ্যান অনুযায়ী) ৫০ ওভারের ক্রিকেটে ভারতের নেতৃত্ব দিলেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বোর্ডের তরফে একটা শব্দও খরচ করা হয়নি। টুইটারেও যে ঘোষণা করা হয়, তাতেও বিরাটের নাম নেয়া হয়নি। রোহিতের ছবি এবং নাম দেয়া হয়। তাকে ট্যাগ করা হয়।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রের খবর কোহলিকে নেতৃত্ব ছাড়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিল বোর্ড। কিন্তু অধিনায়কত্ব ছাড়তে রাজি ছিলেন না তিনি। এরপরেই বোর্ডের পক্ষ থেকে ঘোষণা করে দেয়া হয় নতুন অধিনায়কের নাম। কোহলিকে যে নেতৃত্ব থেকে সরানো হতে পারে সেই জল্পনা ছিলই। কিন্তু বোর্ডের পক্ষ থেকে কোহলিকে নেতৃত্ব থেকে সরানো নিয়ে কোনো কিছুই বলা হয়নি। শুধুমাত্র ঘোষণা করে দেয়া হয় টি-টোয়েন্টি এবং একদিনের ক্রিকেটে ভারতকে নেতৃত্ব দেবেন রোহিত। প্রায় হঠাৎ করেই সাদা বলের ক্রিকেটের নেতৃত্ব হারালেন কোহলি।
তবে সূত্রের ভিত্তিতে পিটিআই জানিয়েছে, একদিনের ক্রিকেটে যে অধিনায়ক হিসেবে কোহলির সময় শেষ হয়ে এসেছে, তা আগেই লেখা হয়েছিল। বিশেষত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্যায় থেকে ছিটকে যাওয়ার পরই কোহলির ভাগ্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল। তবে ভারতীয় বোর্ড কোহলিকে সম্মানের সাথে বিদায় জানাতে চেয়েছিল। সে পথে হাঁটেননি কোহলি। ভারতীয় বোর্ডকে চরম পদক্ষেপ করার ‘চ্যালেঞ্জ’ ছুড়েছিলেন বলে মনে করছে একটি মহল। সেই ‘চ্যালেঞ্জ’ গ্রহণ করে বিসিসিআই। যে বোর্ডের শীর্ষে এমন একজন আছেন, যিনি এককালে ভারতের অধিনায়ক ছিলেন। ‘বরখাস্ত’ করে দেয় বিরাটকে। যা বিরাটের মেনে নেয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না বলে জানিয়েছে পিটিআই।
উল্লেখ্য, পিটিআই জানিয়েছে, অনেকেই এই ঘটনায় অবাক নন। বরং ভারতীয় ড্রেসিংরুমের ধারেকাছে থাকা ব্যক্তিরা একেবারে আলোর মতো 'গোপন' বিষয়টা জানতেন যে কোহলি মোটেও দলের সবথেকে জনপ্রিয় ব্যক্তি ছিলেন না। দলের একাংশ ক্রমশ তার থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন বলে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। বছরদুয়েক আগে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে কাটানো এক খেলোয়াড়কে উদ্ধৃত করে পিটিআই বলেছেন, 'বিরাটের ক্ষেত্রে সবথেকে বড় সমস্যা ছিল বিশ্বাসযোগ্যতার বিষয়টি। ও (বিরাট) মুখে স্পষ্ট কথাবার্তার কথা বলে। কিন্তু উপযুক্ত কথাবার্তার অভাবেই নেতা হিসেবে সম্মান হারিয়ে ফেলেছিল।' পিটিআই জানিয়েছে, আর ঠিক সেখানেই রোহিত খেলোয়াড়দের কাছের হয়ে উঠেছিলেন।
২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ। তার আগে নতুন অধিনায়ক যথেষ্ট সময় দিতে চাইছে বোর্ড। সেই জন্যই এখন থেকেই দলের নেতৃত্ব তুলে দেয়া হলো রোহিতের হাতে। কোহলির নেতৃত্বে আইসিসি-র কোনো ট্রফি জিততে পারেনি ভারত। তার নেতৃত্ব নিয়ে দলের অন্দরেই বার বার প্রশ্ন উঠছিল। বোর্ডের কাছে সিনিয়র খেলোয়াড়দের থেকে অভিযোগ এসেছিল বলেও শোনা যায়। এ বারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিতে হয় ভারতকে। বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার হারতে হয় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কোচ রবি শাস্ত্রীর মেয়াদ শেষ হতেই শেষ হলো সাদা বলের ক্রিকেটে কোহলির নেতৃত্বের মেয়াদ।
এক দিনের ক্রিকেটে ভারতকে ৯৫টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন কোহলি। জিতেছেন ৬৫টি ম্যাচে। হেরেছেন ২৭টি। দু’টি ম্যাচের কোনো ফল হয়নি, একটি ম্যাচ টাই হয়। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির ছায়ায় তৈরি হয়েছিলেন নেতা কোহলি। বিশ্বকাপের দু’বছর আগে সাদা বলের ক্রিকেটে নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয়েছিল তার হাতে। সেই দু’বছরে নিজেকে ঘষে মেজে তৈরি করে নিয়েছিলেন কোহলি। দেশের অন্যতম সফল অধিনায়ক হিসেবে তার নাম যে থাকবে তা নিঃসঙ্কোচে বলা যায়। কিন্তু ট্রফির বাক্স খালিই থেকে গেছে। দ্বিপক্ষীয় সিরিজেই আটকেছিল তার সমস্ত আগ্রাসন।
কোনো দলেই শুধু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য আলাদা অধিনায়ক দেখা যায়নি। সাদা বলের ক্রিকেটে আলাদা অধিনায়ক রয়েছে অনেক দেশেই। অস্ট্রেলিয়ায় যেমন অ্যারন ফিঞ্চ, ইংল্যান্ডে অইন মর্গ্যান, এক সময় ভারতীয় দলে টেস্ট অধিনায়ক ছিলেন কোহলি, সাদা বলের ক্রিকেটে নেতা ছিলেন ধোনি। বোর্ড যে সাদা বলের ক্রিকেটে আলাদা অধিনায়কের পথে হাঁটবে সেই ইঙ্গিত ছিলই। কিন্তু কোহলি একদিনের ক্রিকেট থেকে নেতৃত্ব ছাড়তে চাননি বলেই জানা যাচ্ছে। তাই এক প্রকার তাকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হলো বোর্ড।
এবারের বিশ্বকাপ আসরে টুর্নামেন্ট সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন অসি তারকা ডেভিড ওয়ার্নার। এতে অনেকটাই মনক্ষুণ্ণ পাকিস্তান দলের সমর্থকরা।
কারণ ৬ ইনিংসে ৪ হাফসেঞ্চুরিসহ ৬০.৬০ গড়ে পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজমের সংগ্রহ ৩০৩ রান। আর ডেভিড ওয়ার্নার ৭ ইনিংসে করেছেন ২৮৯
রান। তার গড় মাত্র ৪৮.১৬।
এ পরিসংখ্যান সামনে রেখে ওয়ার্নারের পুরস্কারকে আইসিসির পক্ষপাতমূলক আচরণ হিসেবে দেখছেন পাক সমর্থকরা। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে তারা সমালোচনামুখর। আর সেই সমালোচনায় যোগ দিলেন পাকিস্তানের সাবেক গতি তারকা শোয়েব আখতারও।
তার মতে, বাবর আজমের সাথে অন্যায় করেছে আইসিসি। এবারের বিশ্বকাপ সেরা বাবর আজমই। ওয়ার্নারকে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট দেয়ায় টুইটারে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শোয়েব।
লেখেন ‘বাবর আজমের প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হওয়ার অপেক্ষায় ছিলাম। কোনো সন্দেহ নেই, অন্যায় সিদ্ধান্ত (ওয়ার্নারের সেরা হওয়া)।’
শোয়েবের এমন অভিযোগের পর প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, দল ফাইনালে উঠতে পারেনি সেখান থেকে সিরিজ সেরা কীভাবে বেছে নেয়া যায়!
সেই প্রশ্নের জবাব দিচ্ছে ইতিহাস। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে না উঠেও টুর্নামেন্টের সেরা হওয়ার নজির আছে। ২০১২ বিশ্বকাপে শেন ওয়াটসন ও ২০১৬ সালে বিরাট কোহলির এ কীর্তি আছে। ২০১২ বিশ্বকাপে ১৫০ স্ট্রাইক রেটে সর্বোচ্চ রান ছিল ওয়াটসনের। বোলিংয়েও বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ছিলেন ওয়াটসন। তার দল ফাইনালে না উঠলেও প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হন তিনি।
সিরাজকে ‘বানর’ ডাকা দর্শকদের বের করে দেওয়া হলো | আমি ‘লাস্ট’ হতে খেলব না
সিডনি টেস্টে বর্ণবৈষম্যের অভিযোগ ভালভাবে উঠে এসেছে। আগের দিন, গ্যালারী থেকে ভারতীয় ফাস্ট বোলার মোহাম্মদ সিরাজ এবং যশপ্রীত বুমরাকে লক্ষ্য করে বর্ণবাদী মন্তব্য করা হয়েছিল। ভারতীয় অধিনায়ক অজিঙ্ক্যা রাহানে আম্পায়ারদের কাছে পরিষ্কার করে দিয়েছিলেন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকেও জানানো হয়েছিল। চতুর্থ দিন একই ঘটনা ঘটেছে। তবে একই ঘটনার কারণে আজ কিছু দর্শককে মাঠের বাইরে ফেলে দেওয়া হয়েছে।
চতুর্থ দিন চা বিরতির আগে ঘটনাটি ঘটেছিল। গ্যালারী থেকে আবারও সিরাজকে লক্ষ্য করে খারাপ মন্তব্য এসেছে। সিরাজ ঘটনাটি আম্পায়ারকে জানালে তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সিরাজ গ্যালারীটিতে দর্শকদের খুব নির্দিষ্ট উপায়ে দেখিয়েছিলেন। প্রথমে তিনি বিষয়টি ক্যাপ্টেন রাহানাকে জানিয়েছেন। ভারতীয় ক্যাপ্টেন প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আম্পায়ারদের সাথে কথা বলেছিলেন। সিরাজকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল গ্যালারিতে ঠিক কোথায় থেকে মন্তব্য করা হচ্ছে। সিরাজ দেখালেন। এর পরই পুলিশের সহায়তায় দর্শকদের মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিকে, ভারতের ইংরেজি দৈনিক টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে সিরাজ ও বুমরাকে গতকাল 'বানর' বলা হয়েছিল। আরও কিছু খারাপ মন্তব্য করা হয়েছিল। সম্ভবত বর্ণবিদ্বেষী দর্শকরা মদ খেয়ে বা এর প্রভাবে মন্তব্য করেছিলেন।
ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কেউই এখনও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে প্রাক্তন অস্ট্রেলিয়ান তারকা ও ভাষ্যকার শেন ওয়ার্ন পুরো বিষয়টিকে "লজ্জাজনক" বলেছেন, "এটি লজ্জাজনক, এটি সত্যই লজ্জাজনক।" আমি আশা করছি ঔ লোকদের খুজে বের করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তৃতীয় টেস্টের জন্য ১০,০০০ টি টিকিট ছাড়া হয়েছে। নম্বরটি করোনভাইরাস-আতঙ্কের কারণে। মাঠের খেলোয়াড়রা মাঠের ধারণক্ষমতা থেকে অনেক কম দর্শক থাকায় গ্যালারী থেকে প্রচুর মন্তব্য পুরোপুরি শুনতে পান।
আমি ‘লাস্ট’ হতে খেলব না
ক্রিকেট করোনায় মধ্যেই ফিরে এসেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও এবার বাংলাদেশে ফিরতে চলেছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিকেট দল তিনটি ওয়ানডে এবং দুটি টেস্টের সিরিজ খেলতে আজ সকালে ঢাকায় পৌঁছে যাবে। এক বছরের আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে আসা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও এই সিরিজটি নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন।
গতকাল প্রথম আলোর সাথে একটি সাক্ষাৎকারে সাকিব ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে তাঁর বিরোধিতা এবং দীর্ঘ বিরতির পরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েও কথা বলেছেন।
প্রশ্ন: প্রথমেই জানাই অভিনন্দন। আমাদের ঘরে নতুন অতিথির আগমন ঘটতে চলেছে। অবশ্যই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারের সবাই ভাল আছেন
সাকিব আল হাসান: আলহামদুলিল্লাহ সব ঠিক আছে। আশা করি আমাদের তৃতীয় সন্তান মার্চের দ্বিতীয়ার্ধে আসবেন। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।
প্রশ্ন: প্রায় দশ মাস পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নিয়ে বাংলাদেশ দল আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে চলেছে। আপনিও এই সিরিজে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরবেন। সব মিলিয়ে আপনি কীভাবে সিরিজটি দেখতে চান?
সাকিব: আমি প্রায় দেড় বছর মাঠের বাইরে ছিলাম। সবাই খেলায় ফিরতে সক্ষম হবে, এটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। তবে, খেলায় ফিরে আসার সাথে সাথে প্রত্যাশাও রয়েছে। সেই জায়গা থেকে প্রত্যেকে অবশ্যই আরও ভাল করতে চাইবে। আমি মনে করি না যে জিনিসগুলি সহজ হবে। কেউ কীভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে পারে তা গুরুত্বপূর্ণ হবে।
প্রশ্ন: করোনার বিরতিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুটি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলেছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা দুটি ঘরোয়া টুর্নামেন্ট বাদে আর কিছু খেলেনি। রিটার্ন সিরিজের কোন জায়গাগুলিতে আপনার আরও সমস্যা পড়তে হতে পারে?
সাকিব: যেহেতু এটি ধৈর্য ও সময়ের খেলা, তাই টেস্টগুলি আরও সমস্যা হতে পারে। অবশ্যই ওয়ানডে সিরিজটি যেহেতু এর আগে হচ্ছে, এটি আমাদের সহায়তা করবে। ওয়ানডেতে টেস্টের জন্য কিছু প্রস্তুতি থাকবে।
প্রশ্ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ স্কোয়াডের মূল খেলোয়াড়দের অনেকেই আসছেন না। বাংলাদেশ দলের পক্ষে এটি কতটা ভাল?
সাকিব: যদি কোনও দলের নিয়মিত কিছু খেলোয়াড় না আসে, তবে এটি অবশ্যই বিরোধী দলের পক্ষে একটি সুবিধা। তবে সুবিধাটি ব্যবহার করা আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
প্রশ্ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই দলটি দেখে কি ২০০৯ সালের সফরের কথা মনে পড়ে? সেবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিয়মিত অনেক খেলোয়াড় ছিল না এবং আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ টেস্ট এবং ওয়ানডে উভয় সিরিজ জিতেছে
সাকিব: দেখুন, আপনি যদি ২০০৯ এর কথা বলেন তবে সেই দলের অনেক খেলোয়াড় কিন্তু পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে নিয়মিত হয়েছিলেন। কেমার রোচ এখনও খেলছে। ড্যারেন স্যামি তাদের দুটি বিশ্বকাপ জিতেছে। সুতরাং ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখনকার সময়ে খুব খারাপ দল ছিল, এটি বলা যায় না। সম্ভবত তাদের সেরা দল ছিল না। তবে যারা খেলেছে, তারা পরে ভাল করেছে। মূল খেলোয়াড় ফিরে আসার পরে তারা সেই দলে খেলেছিল। কারও দিকে তাকাবার উপায় নেই। দিনের শেষে এটি ব্যাট এবং বলের খেলা, নামের খেলা নয়!
প্রশ্ন: যেমন আপনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে বলেছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিততে না পারলে হতাশার হওয়া কোনো দরকার নাই।
সাকিব: বলেছেন যারা ভালো খেলে তারা জিতবে খেলতে। এবারও আপনি তাদের অনেক খেলোয়াড়কে দলে পারফর্ম করে দলে জায়গা করে নিয়েছে। এবং এটি তাদের খেলোয়াড়দের আমরা জানি না এমন নয়। তাদের কেউ কেউ সিপিএল বা অন্যান্য ঘরোয়া ক্রিকেটে জাতীয় দলের হয়ে খেলে ভালো করেছেন। যারা আসছে না তারা টি-টোয়েন্টিতে বড় নাম। টেস্টে যারা ভালো নাম কামিয়েছে তারা আসসে নাহ।
প্রশ্ন: হ্যাঁ, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান ফাস্ট বোলাররা টেস্টে আসছেন। অনেক দিন আগের গেমের পরে, ব্যাটিং আপনার পক্ষে অবশ্যই আরও কঠিন হয়ে উঠবে
শাকিব: আমি সেভাবে দেখছি না। গতবার, আমরা তাদের সেরা দলের কাছে হেরেছি। সেই আত্মবিশ্বাসটা থাকা উচিত।
প্রশ্ন: আপনার নিচের কথা বলুন। এক বছরেরও বেশি সময় পরে আবার আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলবে। আপনি কীভাবে আপনাকে প্রস্তুত করছেন?
শাকিব: আজ (গতকাল) আমি সারা দিন আমার ব্যাগ এবং খেলনা প্যাক করেছি। কাল (আজ) হোটেলে উঠব। সবকিছুই এভাবে সাজানো ছিল। গেমটি আসার পরে কিছু ছোট ছোট জিনিস এখানে এবং সেখানে করতে হয়েছিল। তবে এবার মনে হল প্রথমবারের মতো একটি ব্যাগ প্যাকিংয়ের মতো। সবকিছুর পুনঃ পরিকল্পনা করতে হবে।
প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে খেলেছিলেন। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আলাদা। সিরিজটি নিয়ে নিশ্চয়ই খুব রোমাঞ্চিত?
শাকিব: অবশ্যই রোমাঞ্চিত, আমি বলতে পারেন আমি অনেক বেশি রোমাঞ্চিত। রোমাঞ্চকর নিয়ে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে আমার। আমি যত দিন খেলি না কেন, সবাই আশা করবে যে আমি যেখানেই থামলাম সেখান থেকে আবার শুরু হবে। তারা আমাকে সময় দিতে চায় না। প্রত্যাশা, প্রত্যাশার চাপ এগুলি থেকে যাবে।
প্রশ্ন: এত দিন পরে মাঠে প্রত্যাশা পূরণের বিষয়ে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
সাকিব: একজন পেশাদার খেলোয়াড় হিসাবে আমি সবসময় জানি যে এই জিনিসগুলি আছে, থাকবে। তবে আমি সেগুলি সম্পর্কে কখনই খুব বেশি ভাবি না।
প্রশ্ন: চিন্তা আসতে চলেছে। মাঠে ফিরে বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ভালো খেলতে পারেননি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ আরও ভাল খেললে কি আরও আত্মবিশ্বাসী হত না?
সাকিব: সেই টুর্নামেন্টের কিছুই আমার মনে নেই। আমি যদি সেখানে ভাল খেলেও আমার মনে হয় না যে কিছু এসে যাবে। ভাল খেলেনি, কিছু করবে না। আমি টুর্নামেন্টটি খেলি কারণ মাঠে খেলার অভ্যাসে ফিরে যেতে হবে। আমি এই টুর্নামেন্টটি নিয়ে আর ভাবিনি।
প্রশ্ন: খেলায় ফিরে আসার আগে তিনি বিকেএসপিতে কঠোর পরিশ্রম করেছিলেন। নিজেকে অবশ্যই ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনতে হবে এটি।
শাকিব: সবার প্রত্যাশা, এবং আমার নিজের কাছে নিজে নিজস্ব প্রত্যাশা। আমি একসাথে সবকিছু বলতে পারবেন। আমি যখন খেলতে নামি, স্বাভাবিকভাবেই আমি 'শেষ পর্যন্ত থাকবো ' এবং খেলতে নামবো না। শিক্ষার্থী যত কম স্কুলে যায়, সে কম পড়বে; কিন্তু তিনি প্রথম হবার জন্য পরীক্ষা দেয় ।
প্রশ্ন: আপনি কখনও মাঠে ফিরে পেতে এত পরিশ্রম করেছেন?
শাকিব: আমি সম্ভবত গত বিশ্বকাপের আগে এর চেয়ে বেশি অনুশীলন করেছি। অবশ্য এবার বিকেএসপির অনুশীলন ছিল অনেক আলাদা। বিশ্বকাপের আগে আমি চ্যালেঞ্জের মধ্যে ছিলাম। আমি আইপিএল প্রতিযোগিতায় ছিলাম। আমি বিকেএসপিতে একটি লক্ষ্য মাথায় রেখে অনুশীলন করেছি। খুব ভাল অনুশীলন। শ্রীলঙ্কা সিরিজটি যদি তখন শেষ হত তবে আমার পক্ষে দুর্দান্ত হত। কারণ এটি ছিল না, আমি আবার আমেরিকা গিয়েছিলাম ৪৫-৫০ দিনের জন্য। এটা আমার জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশ্ন: বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে আপনাকে জৈব সুরক্ষা অঞ্চলে থাকতে হবে। অভিজ্ঞতা কেমন ছিল?
শাকিব: তা মেনে চলা খুব কঠিন। খেলাই চলাকালীন আমাদের খুব বেশি বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। তবে এটি একটি জিনিস, এবং আপনাকে বলা - কোথায় আটকে যেতে হবে তা অন্যটি। এটির সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই। এখন অবশ্যই ভ্যাকসিন আসছে। ক্রিকেটার বা ক্রিকেট দেশগুলি যদি এটি পায় তবে আশা করি আমাদের আর জৈবিক সুরক্ষায় থাকতে হবে না।
প্রশ্ন: ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য ওয়ানডে দলে জায়গা হয়নি মাশরাফির । অনেকেই বলছেন এটি হয়ত তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের অবসান ঘটেছে । আপনি কি মনে করেন?
সাকিব: আপনি নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে খেললে যে কোনও খেলোয়াড় ফিরে আসতে পারেন। কোনও ব্যাটসম্যান যদি টানা চার বা পাঁচ ম্যাচে সেঞ্চুরি করে বা কোনও বোলার খুব ভাল বোলিং করে, তবে সে কী এড়ানো যাবে? কমপক্ষে 'এ' দলে। তবে প্রত্যাবর্তনের প্রক্রিয়াটি খুব কঠিন।
প্রশ্ন: শেষ প্রশ্ন, আপনার ক্রিকেট একাডেমী প্রায় স্থির ছিল। পরিকল্পনা একাডেমির কী হবে?
সাকিব: মস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় এটি হচ্ছে। আমি একাডেমী সম্পর্কে খুব আশাবাদী। এই মাসে এটি উদ্বোধন করা হতে পারে। সব ধরণের সুযোগ সুবিধা খুব ভালভাবে রাখার চেষ্টা করছি। যদি কোনও জাতীয় দলের খেলোয়াড় যায় তবে তার কিছু মিস করা উচিত নয়। আমি এটিকে চ্যালেঞ্জ সহ বলতে পারি, আমাদের একাডেমির মাঠ বাংলাদেশের অন্য যে কোনও ক্ষেত্রের চেয়ে সুন্দর, ঘাস ভাল। আকারটি কিছুটা ছোট হতে পারে তবে সুবিধাগুলি আরও ভাল হবে। বিদেশী খেলোয়াড় বা কোনও বিপিএল দল সেখানে অনুশীলন করতে গেলে তাদের সমস্ত সুযোগ সুবিধা পাওয়া উচিত। খেলোয়াড় হিসাবে আমার বিভিন্ন দেশের একাডেমিতে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। মানসম্মত একাডেমির মতো দেখতে আমার কিছু ধারণা আছে। এগুলো মাথায় রেখেই করা হচ্ছে।