Articles by "করোনাভাইরাস"
অর্থনীতি অস্ট্রেলিয়া অস্ট্রেলিয়া-ক্রিকেট-দল আওয়ামী-লীগ আদালত আন্তর্জাতিক আন্দোলন আরো আর্থিক-খাত ইরফান-খান ইসলামীক উদ্যোগী-নারী এশিয়া এসএসসি-পরীক্ষা করোনা বাংলাদেশ করোনা-বিশ্ব করোনাভাইরাস ক্রিকেট খুলনা-বিভাগ খেলা খেলাধুলা গোপালগঞ্জ চাকরি চাকরিবাকরি চাকরির-খবর চিকিৎসা চীন চুরি ছাত্রদল জগন্নাথপুর জয়পুরহাট জাতিসংঘ জাতীয় জাতীয়-পার্টি জো-বাইডেন ঝালকাঠি টি-টোয়েন্ট-বিশ্বকাপ টিকা টেবিল-টেনিস ডোনাল্ড ট্রাম্প ঢাকা-বিভাগ ঢাকা-বিশ্ববিদ্যালয় তথ্যপ্রযুক্তি তথ্যমন্ত্রী তারকা নারী নিউজিল্যান্ড নিয়োগ নেইমার পরিবেশ পাইলসের-সমস্যা-১০-উপায় পাকিস্তান পানি পিএসজি পিএসসি পেশা পোশাক প্রযুক্তি প্রযুক্তি-পণ্য ফুটবল ফ্যাশন বগুড়া বরিশাল বরিশাল-বিভাগ বাংলাদেশ বাংলাদেশ-ভারত-সম্পর্ক বাণিজ্য বাবুগঞ্জ বিএনপি বিনিয়োগ বিনোদন বিয়ে বিরাট-কোহলি বিশেষ-সংবাদ বিসিএস ব্যাংক ভর্তি-পরীক্ষা ভারত ভোটাররা-কেন্দ্রে-যেতে-পারলে মতামত যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র-নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রে রংপুর রাজনীতি রাজশাহী-বিভাগ রোহিঙ্গা শাবনূর শিক্ষা শেয়ারবাজার সড়ক-দুর্ঘটনা সযুক্তরাষ্ট্র সরকারি-চাকরি সাকিব-আল-হাসান সিনেমা সিলেট-বিভাগ সোনালী-ব্যাংক স্বাস্থ্য হামলা হাসপাতাল

 


দেশে আবারও করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে পাঁচশর কাছাকাছি পৌঁছেছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৪৯৫ জনের শরীরে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও এক করোনা রোগীর।

একদিনে শনাক্ত রোগীর এই সংখ্যা ১১ সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে গত ১৩ অক্টোবর এরচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৫১১ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচশর নিচে ছিল।  

পরীক্ষা বিবেচনায় দৈনিক শনাক্ত রোগীর হারও আড়াই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। বুধবার পৌনে ১৬ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে ৪৯৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়। এক্ষেত্রে শনাক্তের হার ছিল ২ দশমিক ৩৭। এর আগে গত ১১ অক্টোবর শনাক্তের হার এর চেয়ে বেশি অর্থাৎ ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ হয়েছিল।

এই নিয়ে সর্বমোট করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৫১৮ জনে। তাদের মধ্যে মোট ২৮ হাজার ৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৩৭২ জন। এখন পর্যন্ত মোট ১৫ লাখ ৪৮ হাজার ৪১৬ জন সুস্থ হয়ে উঠছেন।


করোনায় আক্রান্ত হয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী এ মুহূর্তে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি। আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে তাঁর স্বাস্থ্য। উপসর্গ মৃদু হলেও বিসিসিআই সভাপতিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পেছনে হৃদ্‌রোগ একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। এ বছরই শুরুতে হঠাৎ হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। বুকে বসাতে হয়েছে স্টেন্ট। প্রায় এক বছর বাদে তিনি করোনায় আক্রান্ত হলেন। তবে এবার হৃদ্‌রোগের পাশাপাশি ভয় ধরাচ্ছে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন। ভারতে তো এরই মধ্যে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে বিপজ্জনক হারে।

সৌরভের করোনার ধরন অমিক্রন কি না, সেটি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারই পাওয়া যাবে সেই রিপোর্ট। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, হাসপাতালে ভালোই আছেন সাবেক এ অধিনায়ক। জ্বর, কাশি কোনোটিই নেই। তবে সামান্য সর্দি আছে। শরীরে কিছুটা অস্বস্তিও বোধ করছেন।

হৃদ্‌রোগী হওয়ায় কোনো ঝুঁকিই নিচ্ছে না সৌরভের পরিবার। বেঙ্গালুরু থেকে সৌরভকে দেখছেন বিখ্যাত হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। আরেক হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞ আফতাব খানের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে। কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালে তাঁকে ওষুধ হিসেবে দেওয়া হয়েছে মনক্লোনাল ককটেল অ্যান্টিবডি ও ডক্সিসাইক্লিন। দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সৌরভ।

বেশ কয়েক দিন ধরেই ঠান্ডা–সর্দিতে আক্রান্ত ছিলেন সৌরভ। এরপর জ্বর এলে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। একই সঙ্গে স্ত্রী ডোনা গাঙ্গুলী আর মেয়ে সানা গাঙ্গুলীরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাঁরা দুজনই অবশ্য নেগেটিভ হন। এর পরপরই উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।

এ বছরের ২ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে ট্রেডমিলে হাঁটার সময় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভূত হয় সৌরভের। হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা যায় তাঁর হৃদ্‌যন্ত্রের ধমনিতে ব্লক। এরপর অ্যানজিওপ্লাস্টি করা হয়। ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এর পর থেকেই নিয়মতান্ত্রিক জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। তবে বিসিসিআই সভাপতি হিসেবে কর্মব্যস্ততা তো তাঁর আছেই।

কদিন আগেই খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন বিরাট কোহলির সঙ্গে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে। কোহলিকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে সৌরভ মুখ খোলেন। পরে কোহলি সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলে কিছুটা বেকায়দাতেই পড়েন বিসিসিআই সভাপতি। অধিনায়কত্ব ইস্যুতে সৌরভের কথা বলাটা ইতিবাচক চোখে দেখেননি ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। তাঁদের ভাষ্য ছিল, সৌরভ এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ করেছেন অধিনায়কত্ব নিয়ে কথা বলে।


যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, ফ্রান্স, ইতালি, গ্রিস এবং পর্তুগালে একদিনে করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড হয়েছে। এ অবস্থায় গতকাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাভাইরাসের শক্তিশালী ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনকে অতি উচ্চ মাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ বলে ঘোষণা করেছে। ক্রমশ কোভিডের সব থেকে প্রভাবশালী ভ্যারিয়েন্ট হয়ে উঠছে এটি। গত ২৪ ঘন্টায় ফ্রান্সে কোভিড শনাক্ত হয়েছে রেকর্ড এক লাখ ৮০ হাজার জনের। যুক্তরাষ্ট্রেও এ যাবৎকালের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮ জন নতুন করে আক্রান্তের রেকর্ড গড়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের প্রধান দুই শহর মুম্বই ও দিল্লিতেও একদিনের ব্যবধানে যথাক্রমে ৭০ ও ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড সংক্রমণ। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা ও বিবিসি।

গত সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে যে পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন করোনাভাইরাসে, তার মধ্যে শতকরা ১১ ভাগই ওমিক্রনে আক্রান্ত।
বহু দেশে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের কারণে ভাইরাসটির বিস্তার দ্রুততর হয়েছে। বহু দেশে এর আগে আধিপত্য বিস্তারকারী ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ছাড়িয়ে গেছে ওমিক্রন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তার করোনাভাইরাস মহামারি বিষয়ক সাপ্তাহিক আপডেট তথ্যে এসব কথা বলেছে। তারা বলেছে, বৃটেন এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশে প্রাধান্য বিস্তার করছে ওমিক্রন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অব্যাহত তথ্যপ্রমাণ বলছে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে। এতে এই ভ্যারিয়েন্ট আগের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ছাড়িয়ে গেছে।

ওদিকে, বুধবার অস্ট্রেলিয়ায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নতুন রেকর্ড করেছে। ওমিক্রনের দ্রুতগতির বিস্তারের কারণে এমন রেকর্ড হচ্ছে। দেশটির জনপ্রিয় রাজ্যগুলোতে পরীক্ষাকেন্দ্রে উপচে পড়ছে মানুষে। নিউ সাউথ ওয়েলসে অবস্থিত অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় শহর সিডনিতে পরীক্ষা কেন্দ্রগুলোতে ভয়াবহ ভিড়।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে প্রথম রাজ্য হিসেবে কমপক্ষে ৫০ লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রাজ্যটি মঙ্গলবার এ তথ্য প্রকাশ করেছে। গত রোববার টেক্সাসে আক্রান্তের মোট সংখ্যা ছিল কমপক্ষে ৪৪ লাখ। ফ্লোরিডায় ৩৯ লাখ। এ পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়াতে করোনাভাইরাসে মারা গেছেন কমপক্ষে ৭৫ হাজার ৫০০ মানুষ।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) তথ্যমতে, সোমবার একদিনে করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন কমপক্ষে ৪ লাখ ৪০ হাজার মানুষ। সিডিসি বলেছে, বড়দিন ও নতুন বছরের পরে এই সংখ্যা কমে আসতে পারে। অন্যদিকে, মঙ্গলবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, ইউরোপে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৫৭ ভাগ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রে তা বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৩০ ভাগ। সিডিসির তথ্যমতে, ২৭শে ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৪১ হাজার ২৭৮। এটাই যুক্তরাষ্ট্রে এযাবৎকালের মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা।

এদিকে ভারতের মুম্বই এবং দিল্লিতে একদিনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে যথাক্রমে শতকরা ৭০ ও ৫০ ভাগ। বুধবার এই সংক্রমণ আরও বিস্তার লাভ করতে পারে। মঙ্গলবার আর্থিক রাজধানী মুম্বইয়ে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০৯ জন। মারা গেছেন তিনজন। সেখানে সংক্রমণের হার অনেক বেশি। ৮ই ডিসেম্বর থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে শতকরা ১৮৮ ভাগ বৃদ্ধি পেয়েছে সংক্রমিতের সংখ্যা। অন্যদিকে ‘হলুদ সতর্কতা’র অধীনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের পর দিল্লিতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ খবর দিয়ে অনলাইন এনডিটিভি বলেছে, ২রা জুনের পর সেখানে একদিনে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, এ অবস্থায় যখন মার্কেট ও মলগুলোতে মানুষের ভিড় দেখতে পাই, তখন হতাশ হই আমরা। যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে তাহলে আমাদেরকে মার্কেটগুলো বন্ধ করে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমি জানি আপনারা সবাই বিধিনিষেধের কারণে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু এ বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, এক্ষেত্রে আমাদের করার কিছু নেই।

নতুন বিধিনিষেধের অধীনে স্কুল, কলেজ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সিনেমা হল এবং জিম বন্ধ থাকবে। মল এবং দোকানপাট খোলা থাকবে জোড়-বেজোড় ভিত্তিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে। দিল্লিতে মেট্রো চলবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে। এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত কারফিউ।

অন্যদিকে নতুন করে মহারাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২১৭২ জন। মারা গেছেন ২২ জন। তবে বুধবার সেখানে ওমিক্রনে কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। ২৭শে ডিসেম্বর পর্যন্ত এই রাজ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন ১৬৭ জন। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপে বলেছেন, যদি রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা দিনে ৮০০ টনে দাঁড়ায় তাহলেই শুধু লকডাউন দেয়া হবে। সম্প্রতি রাত ৯টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে প্রকাশ্যে ৫ জনের বেশি মানুষের সমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে রাজ্য সরকার।


করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন অতিসংক্রামক। যদিও ভাইরাসের এই ধরনটি ডেল্টার  তুলনায় দুর্বল বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

ডব্লিউএইচও জানায়, ভাইরাসের আগের ধরনগুলোতে সংক্রমিত ব্যক্তি বা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের সহজেই সংক্রমিত করতে পারে ওমিক্রন। তবে এতে সংক্রমণের প্রভাব অন্যান্য ধরনগুলোর তুলনায় মৃদু।

বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেখা যায় যে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পুনঃসংক্রমণের হার বেশি। কিন্তু ডেল্টা ধরনের তুলনায় ওমিক্রনে অসুস্থতার মাত্রা মৃদু।

তিনি বলেন, ওমিক্রনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট উপসংহারে পৌঁছানোর আগে আমাদের আরও তথ্য জানার প্রয়োজন আছে। নতুন ধরন হওয়ায় ওমিক্রনের চারিত্রিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য বাকি ধরনগুলোর তুলনায় অনেকটাই আলাদা। আর তাই ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া দেশগুলোকে আরও বেশি করে তথ্য সরবরাহ করার আহ্বান জানাচ্ছি।

তবে এখনই ওমিক্রনের মৃদু সংক্রমণের তথ্যে আশংকামুক্ত ভাবার কোনো বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক। তিনি সবাইকে শতর্ক করে বলেন, এই সময়ে যেকোনো ধরনের অসতর্কতার চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। তাই অতি-সতর্ক থাকা প্রয়োজন।


মারাত্মক পরিবর্তিত করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। প্রথম শনাক্ত হওয়ার চার সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বুধবার (১ ডিসেম্বর) দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিক্যাবল ডিজেসেস (এনআইসিডি) জানায় দেশটিতে বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৮ হাজার ৫৬১ জন সংক্রমিত হয়েছে। দেশটিতে এখন সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন।

এনআইসিডি জানিয়েছে, ওমিক্রনের প্রোফাইল এবং মহামারির প্রাথমিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে এই ভ্যারিয়েন্টটি কিছু প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়াতে পারে, কিন্তু প্রচলিত টিকা এখনও মারাত্মক অসুস্থতা এবং মৃত্যু থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকান সংস্থাটি জানিয়েছে, গত মাসে জিনগতভাবে বিশ্লেষণ করা নমুনার ৭৪ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এক সপ্তাহ আগে ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। যে নমুনায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া যায় তা দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল গৌতেং প্রদেশ থেকে ৮ নভেম্বর সংগ্রহ করা।

গত মঙ্গলবারের তুলনায় দেশটিতে বুধবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। 


মহামারীর অভিধানে নতুন শব্দ ‘ওমিক্রন’ যুক্ত হওয়ার পর করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের আশা ম্লান হয়ে গেছে আর বাজারগুলো ফের মুখ থুবড়ে পড়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকায় আবির্ভূত হওয়া করোনাভাইরাসের এই ভ্যারিয়েন্টটিকে গ্রিক বর্ণমালার ১৫তম অক্ষরের নামে নামকরণ করা হয়েছে। এই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে বিশ্বজুড়ে তুমুল উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) চলতি বছরের মে-তে নামকরণের এই পদ্ধতি ঘোষণা করে। সংস্থাটি ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে করোনাভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট নিয়ে গণযোগাযোগ সহজ হয়েছে ও বিভ্রান্তি কমেছে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভারতে করোনাভাইরাসের যে ভ্যারিয়েন্টটি প্রথম শনাক্ত হয় সেটি বি.১.৬১৭.২ নামে পরিচিতি পায়নি, পেয়েছে গ্রিক বর্ণমালার চতুর্থ বর্ণ ডেল্টার নামে।

ডব্লিউএইচওর তথ্য অনুযায়ী, এখন সাতটি ‘মনোযোগ সৃষ্টিকারী ভ্যারিয়েন্ট’ বা ‘উদ্বেগজনক ভ্যারিয়েন্ট’ আছে, এর প্রত্যেকটির জন্যই একটি গ্রিক বর্ণ নির্দিষ্ট করা আছে।

গ্রিক বর্ণ দিয়ে চিহ্নিত আরও কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট থাকলেও সেগুলো ‘উদ্বেগজনক ধরনের’ স্তরে পৌঁছেনি, তাই সেগুলো নিয়ে আলোচনাও হয়েছে কম আর ডব্লিউইএচও ওমিক্রণের ঠিক আগে ‘নিউ’ ও ‘শি’ বর্ণ দুটি এড়িয়ে গেছে। 

শনিবার ডব্লিউএইচওর মুখপাত্র তারিক জাহারেভিক বলেন, “‘নিউ’ খুব সহজে ইংরেজি শব্দ ‘নিউ’ এর সঙ্গে বিভ্রান্তি তৈরি করবে আর ‘শি’ ব্যবহার করা হয়নি কারণ এটি প্রচলিত নামের শেষাংশ।”

তিনি জানান, সংস্থাটি রোগের নামকরণের ক্ষেত্রে ‘কোনো সংস্কৃতিক, সামাজিক, জাতীয়, আঞ্চলিক, পেশাদার বা জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে যেতে পারে’ এমন নাম এড়িয়ে যাওয়াকে শ্রেয় মনে করে।

ডব্লিউএইচও বলেছে, ভ্যারিয়েন্টগুলোর বৈজ্ঞানিক নামের চেয়ে এই নামকরণ পদ্ধতি সহজ ও বোধগম্য, বৈজ্ঞানিক নামগুলো ‘বলা ও মনে রাখা কঠিন হতে পারে এবং প্রতিবেদনগুলোতে প্রায়ই ভুলভাবে আসে।

তাদের এ বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেছেন কিছু গবেষক | 

কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরাসবিদ ডা. অ্যাঙ্গেলা রাসমুসেন জানান, চলতি বছর গ্রিক নামকরণ পদ্ধতি ঘোষণার আগে তিনি সাংবাদিকদের অনেক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আর বি.১.১.৭ এবং বি.১.৩৫১ ভ্যারিয়েন্টের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সৃষ্ট বিভ্রান্তিতে বারবার হোঁচট খেয়েছেন।

“কথা বলার সময় ধারবাহিকভাবে এসব নাম ব্যবহার করা সত্যি কষ্টকর। শেষ পর্যন্ত মানুষ এগুলোকে যুক্তরাজ্য ভ্যারিয়েন্ট বা দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্যারিয়েন্ট বলা শুরু করে,” বলেন তিনি।

এই দুটি ভ্যারিয়েন্ট এখন আলফা ও বিটা নামে পরিচিত। প্রথমটির আবির্ভাব যুক্তরাজ্যে আর পরেরটির দক্ষিণ আফ্রিকায়। 

রাসমুসেন জানান, ডব্লিউএইচওর গ্রিক নামকরণ পদ্ধতিতে যাওয়ার এটি আরেকটি বড় কারণ, নামকরণের পুরনো রীতিটি ভাইরাসটি যেখানে আবির্ভূত হয়েছে সেখানকার মানুষের জন্য অন্যায্য ছিল।

ডব্লিউএইচও জাতীয় কর্তৃপক্ষ ও গণমাধ্যমগুলোকে নতুন নাম ব্যবহার করতে উৎসাহিত করেছে। তবে তারা বৈজ্ঞানিক নামগুলো পাল্টে দেয়নি, যা বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করে এবং গবেষণাকালে ব্যবহৃত হয়।



দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৭ হাজার ৯০১ জনে।

এছাড়া একই সময়ে নতুন করে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন আরও ২১৫ জন। এতে করে দেশে করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হলো ১৫ লাখ ৭১ হাজার ২২৮ জনে।


সোমবার (৮ নভেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত করোনা পরিস্থিতি সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষা হয় ১৬ হাজার ৮১২ জনের। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।

এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২০৯ জন। মোট সুস্থ ১৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩৪ জন।

এর আগে রোববার (৭ নভেম্বর) আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যান চারজন। করোনা শনাক্ত হয় ১৭৮ জনের দেহে।

বিশ্বব্যাপী করোনার পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডওমিটারের তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ সময় সোমবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৫৯৫ জনের, শনাক্ত হয়েছে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৬৪ জন।

এর আগে রোববার মৃত্যু হয়েছিল ৬ হাজার ৩০৫ জনের, শনাক্ত হয়েছিল ৪ লাখ ১৫ হাজার ৬০৮ জনের।

এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২৫ কোটি ৬ লাখ ১০ হাজার ৪৫২ জন এবং মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লাখ ৬৪ হাজার ৫৮৫ জনে। আর সুস্থ হয়েছেন ২২ কোটি ৬৮ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৭ জন।

করোনায় এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশ যুক্তরাষ্ট্রে। তালিকায় শীর্ষে থাকা দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ৪ কোটি ৭৩ লাখ ৩৬ হাজার ৫৭৭ জন। মৃত্যু হয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার ২১৮ জনের।

আক্রান্তে দ্বিতীয় এবং মৃত্যুতে তৃতীয় অবস্থানে থাকা ভারতে এখন পর্যন্ত করোনায় ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৬৬ হাজার ৬১৪ জন সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪৩ জনের।

আক্রান্তে তৃতীয় ও মৃত্যুতে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ব্রাজিলে এখন পর্যন্ত মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২ কোটি ১৮ লাখ ৮০ হাজার ৪৩৯ জন এবং এখন পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৯ হাজার ৪৮৪ জনের।

আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৯৩ লাখ ১ হাজার ৯০৯ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন এক লাখ ৪১ হাজার ৮০৫ জন।

পঞ্চম স্থানে থাকা রাশিয়ায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৮৭ লাখ ৯৫ হাজার ৯৫ জন। মারা গেছেন ২ লাখ ৪৬ হাজার ৮১৪ জন।

আক্রান্তের তালিকায় তুরস্ক ষষ্ঠ, ফ্রান্স সপ্তম, ইরান অষ্টম, আর্জেন্টিনা নবম এবং স্পেন দশম অবস্থানে রয়েছে। এ তালিকায় বাংলাদেশে অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৩০তম।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২২৩টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।

করোনা প্রতিরোধী ট্যাবলেটের অনুমোদন দিলো যুক্তরাজ্য 


যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী মেরেকের অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেটের অনুমোদন দিয়েছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মহামারি মোকাবিলার জন্য এ ট্যাবলেটকে গুরুত্বপূর্ণ নতুন হাতিয়ার হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৪ নভেম্বর) ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।


মেরেক বৃহস্পতিবার জানায়, যুক্তরাজ্যের মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটরি এজেন্সি যাদের হালকা থেকে মাঝারি ধরনের করোনার উপসর্গ আছে তাদের জন্য এ ট্যাবলেটের অনুমোদন দেয়।

অনুমোদিত করোনা প্রতিরোধী এ ট্যাবলেটটি মুখে খাওয়া জন্য। যাদের হালকা থেকে মাঝারি ধরনের করোনা উপসর্গ রয়েছে তাদের হাসপাতালে ভর্তি অথবা মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে এ ট্যাবলেট।


যুক্তরাষ্ট্র ও ইইউ নিয়ন্ত্রকরা এখনো মেরেকের এ মুখে খাওয়ার ওষুধটির কার্যকারিতা মূল্যায়ন করছে। গত মাসে গবেষণার ফেজ-৩ তে ইতিবাচক ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশের সরকার এ ওষুধ ক্রয় করতে চাচ্ছে।


যুক্তরাষ্ট্রের মেরেক ও রিজব্যাক কর্তৃপক্ষের এ ট্যাবলেটের উদ্ভাবন করেছে। গবেষকরা দাবি করছেন এটি শেষ ধাপের ট্রায়ালে ভালো ফল দেখিয়েছে। মেরেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রব ডেভিস এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, আমরা ট্রায়ালে ভালো ফল পেয়েছি। আপনাকে হাসপাতালে যেতে হবে না, বা অন্য কোথাও যেতে হবে না। বাড়িতে বসে এই ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।


মোলনুপিরাভির নামক এ ওষুধটি হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া করোনা রোগীদের ব্যবহারের জন্য তৈরি করা হয়েছে বিশেষ করে যাদের পাঁচ বা তার কম দিনের জন্য উপসর্গ রয়েছে এবং যারা মারাত্মক সংক্রমণের ঝুঁকিতে রয়েছেন

কোভিড-১৯ যা করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত - সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের শিরোনামে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এশিয়ার বিভিন্ন অংশ এবং এর বাইরেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন।

করোনা ভাইরাস থেকে নিরাপদ থাকুন

কতটা ভয়ংকর এই ভাইরাস?

শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতার মতো এই ভাইরাসের ক্ষেত্রেও সর্দি, কাশি, গলা ব্যথা এবং জ্বরসহ হালকা লক্ষণ দেখা দিতে পারে । কিছু মানুষের জন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। তবে খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেশি। 

আমার কি মেডিক্যাল মাস্ক পরা উচিত?

করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের বিস্তার সীমিত পর্যায়ে রাখতে মেডিক্যাল মাস্ক সাহায্য করে। তবে এটার ব্যবহারই এককভাবে সংক্রমণ হ্রাস করতে যথেষ্ঠ নয়। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে মেলামেশা না করা এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম উপায়।

শিশুরা কি ঝুঁকিতে?

যে কোন বয়সের মানুষই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রধানত: আগে থেকে অসুস্থ বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস মারাত্মক হতে পারে।

তবে শহরাঞ্চলের দরিদ্র শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে। এসব প্রভাবের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় বন্ধ থাকা, যা সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় দেখা গেছে।

“এই করোনাভাইরাসটি ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি প্রতিরোধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের উপর এই ভাইরাসের প্রভাব বা এতে কতজন আক্রান্ত হতে পারে- সে সম্পর্কে আমরা এখনও বেশি কিছু জানি না। কিন্তু নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। সময় আমাদের সাথে নেই।”

ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর

 

ইউনিসেফ এক্ষেত্রে কি করছে?

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর ক্ষেত্রে চীনকে সহযোগিতা করতে প্রতিরোধক মাস্ক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রতিরক্ষামূলক স্যুট নিয়ে ইউনিসেফের একটি চালান জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে চীনের সাংহাইয়ে পৌঁছেছে।

ছয় মেট্রিক টনের এই চালানটি কোপেনহেগেনে ইউনিসেফের বৈশ্বিক সরবরাহ কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়েছে এবং এটি চীনের ইউহানে প্রেরণ করা হবে। আগামী দিনগুলিতে ইউনিসেফ আরও জরুরী সরবরাহ পাঠাবে।

উপমহাদেশে করোনা মোকাবিলার সক্ষমতায় সবার ওপরে বাংলাদেশ

তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ উপমহাদেশের অন্যতম একটি দেশ যার মধ্যে কোভিড -১৯ (করোনভাইরাস) মোকাবেলা করতে সক্ষম। মন্ত্রী শুক্রবার রংপুর সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলছিলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক অর্থনৈতিক প্রচার মাধ্যম ব্লুমবার্গের একটি প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে। প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে হাসান মাহমুদ আরও বলেছিলেন যে করোনার সাথে ডিল করার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ ২০তম রয়েছে।

শুক্রবার মন্ত্রী বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতার কেন্দ্রের রংপুর উপকেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ সময় করোনার পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারত থেকে ভ্যাকসিন আমদানির বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে কোনও উদ্বেগ নেই। চুক্তি অনুসারে করোনার ভ্যাকসিন সময়মতো আসবে।


দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জন্য ডিজিটাল সুরক্ষা আইনে (আইসিটি অ্যাক্ট) গণমাধ্যমকর্মী সময়কালে তার সংঘটিত ছাত্ররা হঠাৎ মাহমুদকে বলেছিল, 'জাতিসত্তা যে সংঘটিত ভোটাভুটি, জড়িতদের কোনও দিন নয় না কোনও সময় অসচেতন ও সংবাদ সংস্থাগুলি সমীচীন নয় প্রস্তাব করা হয়েছে সময় হবে। আর কারও মুখোমুখি হয় না। যদি কোনও শ্রীরাণীর পান হন, তবে আমার দৃষ্টিগোচর থাকুক না 


তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে দেশের আরও ছয় বিভাগীয় শহরে একটি পূর্ণাঙ্গ বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) সম্প্রচার স্টেশন স্থাপন করা হচ্ছে। রংপুর কেন্দ্রের কাজ দুই থেকে আড়াই বছরে শেষ হবে।

সার্কিট হাউসে মতবিনিময়কালে রংপুর জেলা প্রশাসক অসিব আহসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মধুসূদন দত্ত, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


আদালতে বিয়ে করলেন ধর্ষণ মামলার আসামি, সন্তানসহ ফিরলেন বাড়ি


ধর্ষণ মামলার আসামি বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরার একটি আদালতে বাদীর সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এরপর আদালত অভিযুক্তকে জামিন মঞ্জুর করেন। জামিন শেষে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ওই ব্যক্তি। দুপুরে মহিলা ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত রবিউল ইসলাম (৩৫)। তার বাড়ি সদর উপজেলার ছায়ঘরিয়া গ্রামে।


মামলার বিবরণে জানা যায়, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রবিউল একটি ২২ বছর বয়সী কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ফলস্বরূপ, মেয়েটি গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর একটি ছেলের জন্ম দেয়। তিনি এবং তার সন্তানের স্বীকৃতি না পাওয়ায় এই মহিলা ১২অক্টোবর মহিলা ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। পুলিশ ২২ ডিসেম্বর রবিউলকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে প্রেরণ করে।

বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জহুরুল হায়দার আদালতকে বলেছেন, আজ মহিলা ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। শুনানি চলাকালীন বাদী বলেছেন যে অভিযুক্তকে তার বিয়ে, সন্তানের স্বীকৃতি এবং এক লাখ টাকা দেওয়া হলে জামিন নিয়ে তাদের আপত্তি নেই। একপর্যায়ে রবিউল সমস্ত শর্ত মেনে চাঁদাবাজিকে আরও এক লক্ষ টাকা দিয়ে বিয়ের জন্য ডেকে আনে। কাজী এসে বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলেন। এরপরে বিচারক শেখ মফিজুর রহমান রবিউলকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেন। আদেশের পরে রবিউল স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বাড়িতে চলে যান।


আসামিপক্ষের আইনজীবী শেখ রায়হান আলী প্রথম আলোকে জানান, তিনি বৃহস্পতিবার এই মামলার আসামি রবিউলের জামিনের আবেদন করেছিলেন। শুনানির এক পর্যায়ে রাজ্যের বিশেষ পিপি জহুরুল হায়দার পরামর্শ দিয়েছিলেন যে যদি বাদীকে বিবাহ, শিশুদের স্বীকৃতি এবং এক লাখ টাকা দেওয়া হয় তবে তাদের আসামির জামিন নিয়ে কোনও আপত্তি থাকবে না। আসামি সকল শর্ত সাপেক্ষে বাদীর সাথে আদালতের সম্মতিতে বিয়ে করেন। পরে আদালত আসামিকে জামিনে মুক্তি দেয়। আইনত সব কিছু করা হয়েছে।



করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ এ চলে এলো

দ্রুত টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কম বিকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকারের উপর নির্ভরশীল। সেই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং বিতরণ সংস্থা আগামী জুনের আগে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে বলে সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন না থাকলে বাংলাদেশকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দলকে ঢুকতে দিচ্ছে না চীন  

দ্রুত টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কম বিকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকারের উপর নির্ভরশীল। সেই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং বিতরণ সংস্থা আগামী জুনের আগে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে বলে সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন না থাকলে বাংলাদেশকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

একটি উৎসের উপর নির্ভর না করে পরিবর্তে সরকারকে একাধিক উৎসের সাথে চুক্তি করতে হয়েছিল।

আবু জামিল ফয়সাল, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ

ফাইজার-বায়োনেটেক এবং আধুনিক ভ্যাকসিনগুলি অনেক আগেই অনুমোদিত হয়েছে। রাশিয়া এবং চীন থেকে আসা ভ্যাকসিন একাধিক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা এখন কমপক্ষে ৩০টি দেশে টিকা দিচ্ছে। কিছু দেশে একাধিক সংস্থার ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি নতুন ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হতে পারে। সরকার এসব উত্স থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য কী করছে তা কেউ বলছে না।


গত তিন দিন ধরেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদার পুনাওয়ালার বক্তব্যকে ঘিরে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা ছিল। তবে তিনি মঙ্গলবার একটি টুইট বার্তায় বলেছেন যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনগুলি সমস্ত দেশে রফতানি করার অনুমতি রয়েছে।



ভারতে ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণের আগে বাণিজ্যিকভাবে অন্য দেশকে টিকা না দেওয়ার বিষয়ে পুনাওয়ালার কিছু বক্তব্যকে ঘিরে বিভ্রান্তি রয়েছে। রয়টার্স পুনাওয়ালাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে তারা আগামী দুই মাসের মধ্যে ভারতের ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণ করবে। প্রাথমিকভাবে ভারত সরকারকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের পরেই ভ্যাকসিনগুলি রফতানি করা সম্ভব হবে।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে টিকা দেওয়া হবে। সিরাম বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে টিকা দেবে। প্রথমে ৫০ লক্ষ টিকা দেওয়া হবে। পরে সর্বমোট ৩ কোটি টিকা ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ।

মওদুদ আহমদের শারীরিক অবস্থার অবনতি | ভাস্কর্য নিয়ে ভুল

অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে। বাংলাদেশ সরকার শ্রীরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন কিনছে। এই ভ্যাকসিনটি বেক্সিমকো ফার্মা সরবরাহ করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তিটি দুই সরকারের মধ্যে বা বাণিজ্যিক মধ্যে রয়েছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।


এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেছিলেন যে এটি দুটি সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি। বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি ছিল। তবে গতকাল সারাদিন এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনও বিবৃতি শোনা যায়নি।


স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে টিকা দেওয়া হবে। সিরাম বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে টিকা দেবে। প্রথমে ৫০ লক্ষ টিকা দেওয়া হবে। পরে সর্বমোট ৩ কোটি টাকার ভ্যাকসিন দিতে হয় প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা। বেক্সিমকো সেই টিকা দেশের জেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেবে। একজন সিনিয়র স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, বেক্সিমকোর ভূমিকা মূলত একজন পরিবেশকের।


বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান গত সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেছিলেন, "আমরা ইতিমধ্যে সেরামের ভ্যাকসিন বুক করে দিয়েছি। আমরা তা পেয়ে যাব। একবার বা দু'টি আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে, সরকার যেদিন চাইবে সেদিন ভ্যাকসিন আনতে সক্ষম হব। চিন্তার কিছু নেই।


কোভাকস উদ্যোগ


সেরামের বিকল্প হিসাবে সরকারের কোভ্যাক্স উদ্যোগ রয়েছে। তবে আগামী ছয় মাসের আগে সেখান থেকে টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা কম ইউনিসেফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ভ্যাকসিন নির্মাতারা করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ করার জন্য কোভাক্স নামে একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটির নেতৃত্বাধীন সিইপিআই, গাভি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।


কোভ্যাক্স থেকে টিকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করা হয়েছে। কোভাক্স ভ্যাকসিনটি জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও অন্যান্য ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা চলছে।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে যে ১৯০ টি দেশ কোভ্যাক্সের উদ্যোগে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৯২ টি স্বল্পোন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলি ২০২১ সালের প্রথমার্ধে কমপক্ষে ১৩০ কোটি টাকা পাবে। এর মাধ্যমে দেশগুলি তাদের ২০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবে।

বরিশালে বউভাতে মাংস কম দেওয়া নিয়ে মারামারি, বরের চাচার মৃত্যু

স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম গতকাল বলেছিলেন যে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করা হয়েছে। কোভাকস ভ্যাকসিনটি জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও অন্যান্য ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা চলছে। "আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি ভ্যাকসিন অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে," তিনি বলেছিলেন। ভ্যাকসিন কিনতে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। তাই টিকা দেওয়ার বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই। 



সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা সম্ভাব্য সকল উৎস থেকে ভ্যাকসিনটি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগে রাশিয়ার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন কেনার কথা ছিল। রাশিয়ার স্পুটনিক -৫ টিকার জন্য প্রতি ১০ ডলার লাগবে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একাধিক বৈঠকে বলেছেন, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারত যে কোনও দেশ থেকে এই ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করবে।

পাকিস্তানকে যেখানে ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ

তবে এই কার্যক্রমগুলি এখনও পরিষ্কার নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের আরও বিকল্পের সন্ধান করা উচিত ছিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন যে একটি উত্সের উপর নির্ভর না করে সরকারকে একাধিক উত্সের সাথে চুক্তি করতে হয়েছিল। আরেকটি বিকল্প বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হত যদি চীনা সংস্থা সিএনভ্যাকের সাথে চুক্তিতে টিকার পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই কূটনীতি জোরদার করতে হয়েছিল। অন্যদিকে, কোভ্যাক্স থেকে দ্রুত আরও বেশি ভ্যাকসিন আনতে সরকারের উচিত বিশেষ মনোযোগ দেওয়া।



বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দলকে ঢুকতে দিচ্ছে না চীন


করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তকারী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এই ঘটনায় হতাশ হলেন ডাব্লুএইচওর প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। গার্ডিয়ান মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে। চীনা কর্মকর্তাদের মতে, ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যদের জন্য ভিসা এখনও অনুমোদিত হয়নি। সুতরাং তারা সেই দেশে আসতে পারে না। তবে ডাব্লুএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের কিছু সদস্য ইতোমধ্যে চীনের উহান যাত্রা শুরু করেছেন। 

বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ডাব্লুএইচওর মহাপরিচালক। তিনি ডাব্লুএইচও প্রতিনিধিদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য চীনকেও আহ্বান জানিয়েছেন।


টেড্রোস অ্যাধনম জেরিবাসাস বলেছেন, ডাব্লুএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের দুই সদস্য ইতিমধ্যে তাদের যাত্রা শুরু করেছেন। অন্যরা শেষ মুহুর্তে ট্যুর করতে পারছেন না। এই খবরে তিনি খুব হতাশ। ডব্লিউএইচও প্রধান জানিয়েছেন যে তিনি চীনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে মিশনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি অগ্রাধিকার।


ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, ডব্লুএইচও জানিয়েছিল, করোনার উদ্ভব সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য ১০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীর একটি দল ২০২১ সালে চীনা শহর উহান সফর করবে। এরপর এই উদ্যোগকে বেইজিং স্বাগত জানায়। তবে এখন তারা ডাব্লুএইচও বিশেষজ্ঞ দলকে দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না। 

বিজ্ঞানীরা বলেছেন অপরাধী কে খেঁজে  বের করা নয়। আমরা দেখতে চাই আসলে করোনা ভাইরাস কথা। এন্ড কিভাবে উৎপত্তি হলো তা জানার জন্য । এবং কিভাবে মানুষের মধ্যে ছড়ালো তা সম্পূর্ণ ভাবে জানার জন্য আমরা এই কাজ টি করতে চাই। এবং জেনে ভবিষ্যতে সংক্রমণের উপায় বের করতে চাই।


ডিসেম্বর ২০১৯  সালে, প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি চিনের উহান শহরে সনাক্ত করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে মহামারীটি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে।


করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার

করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবলার ও ফুটবল প্রশিক্ষক সাফিনুর রহমান সম্রাট (৫৬)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে বগুড়ার আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে জানাজার পরে সন্ধ্যায় গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

সাফিনুর রহমান বগুড়া শহরের নারুলি এলাকায় থাকতেন। তিনি ফুসফুস সহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার জানান, সাফিনুর কয়েকমাস আগে করোনভাইরাসকে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন। ফুসফুসে জটিলতার কারণে তাকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রায় দেড় মাস সেখানে তাকে চিকিত্সা করার পরে সপ্তাহখানেক আগে


বছর কয়েক আগে ট্যাক্স থেকে মুক্তি পান। তবে তিনি করোনার পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও এই কারণেই তিনি হাসপাতালটি ছেড়েছিলেন, তিনি ঢাকাতেই চিকিৎসার জন্য থাকছিলেন। বুধবার রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসিএনসেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

৪০তম বিসিএসের ফল এ বছর প্রকাশ না হওয়ার কারণ জানাল পিএসসি

বছর কয়েক আগে ট্যাক্স থেকে মুক্তি পান। তবে তিনি করোনার পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও এই কারণেই তিনি হাসপাতালটি ছেড়েছিলেন, তিনি ঢাকাতেই  চিকিৎসার জন্য থাকছিলেন। বুধবার রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসিএনসেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।


বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, সাফিনুর রহমান  ১৯৮৬-৮৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় ফুটবল দলের আক্রমণকারী খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি 1989 এশিয়া কাপে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। মোহামেডান ছাড়াও তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়নের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন যে, আরামবাগ ক্রিড়া চক্র, পিডাব্লুডি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছে। খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ফুটবল কোচের পেশা বেছে নিয়েছিলেন। বগুড়া ছাড়াও সাফিনুর ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।

খবর প্রকাশ করছে : prothomalo


কাহালুতে বাস উল্টে একজন যাত্রী নিহত


বগুড়ার কাহালু উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে কাহালু উপজেলার দারগাহাট এলাকায় একটি পাটকলের কাছে নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে ধাক্কা লেগে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে যায়। যাত্রীবাহী বাসটি পেঁচানো হয়েছিল। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের যাত্রী ফাহিমা বেগম (৪০) নিহত হন। ফাহিমা জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বানিয়াচাপার গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী।

আরো পড়ুন : এমদাদ হকের নতুন অধ্যায়

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে জয়পুরহাটের ফুলদিঘি বাজারের দিকে শাকিব পরিবহনের একটি বাস কয়েক যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল। বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের কাহালু উপজেলার দরগাহাট এলাকায় নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে বাসের সংঘর্ষ হয় এবং উল্টে যায়। বাঁকানো বাসের ভিতরে কয়েকজন যাত্রী আটকা পড়েছিল। এ সময় বাসের যাত্রী ফাহিমা পিষ্ট হয়ে মারা যান। আহত কয়েকজন যাত্রীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।


কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, মহাসড়কে নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে সংঘর্ষের পরে যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে যায়। ফাহিমা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।


খবর প্রকাশ করছে : prothomalo


করোনার টিকার ন্যায্য বণ্টনের আহ্বান ডব্লিউএইচওর

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লুএইচও) এর মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম জেব্রেয়াসাস দেশগুলিকে করোনভাইরাস ভ্যাকসিনগুলির সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ডাব্লুএইচওর প্রধান এক ভিডিও বার্তায় এই আহ্বান জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। চীনে প্রথম করোনভাইরাস সনাক্তকরণের এক দিন পূর্বে টেড্রস আধানম জেব্রিয়াস একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।


ভিডিও বার্তায় ডাব্লুএইচওর মহাপরিচালক কেবল ধনী দেশেই নয়, সারা বিশ্ব জুড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকদের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। কোদাক্স উদ্যোগের মাধ্যমে টেড্রস অ্যাধনম জেব্রিয়াসস বিশ্বের ৪ বিলিয়ন ডলার নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলির জন্য ভ্যাকসিন কেনার আবেদন করেছে। "নতুন বছরে এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে," তিনি বলেছিলেন।

আরো পড়ুন : বাংলাদেশ–ভারতের অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টনে ন্যায্যতা চাই

কোভ্যাক্স উদ্যোগের লক্ষ্য ধনী বা দরিদ্র দেশ নির্বিশেষে করোনার ভ্যাকসিনগুলির সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করা। কোভাক্স - কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাক্সেস সুবিধা কোভাকস একটি যৌথ আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মহামারী প্রস্তুতি ইনোভেশনস (সিইপিআই) কোয়ালিশন এবং ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (সিইপআই) যৌথভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে।


কোভাক্স উদ্যোগের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে ২০০ মিলিয়ন ডোজ নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন সরবরাহ করা। ডাব্লুএইচওর প্রধান জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি করোনার মহামারী রোধে দুর্দান্ত আশা প্রদান করছে। তবে বিশ্বকে সুরক্ষিত করার জন্য, এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে যে কোনও জায়গায় ঝুঁকিতে থাকা সমস্ত লোককে করের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়া হচ্ছে। যেসব দেশে ভ্যাকসিন কেনার ক্ষমতা রয়েছে তাদের কেবল সেখানে টিকা দেওয়ার দরকার নেই।


খবর প্রকাশ করছে : prothomalo

করোনায় বছরজুড়ে বিচ্ছিন্ন বিপর্যস্ত বিশ্ব



এ পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন বিভিন্ন দেশে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিনটি গতকাল যুক্তরাজ্যে, দুটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এবং একটি রাশিয়া ও চীনে অনুমোদিত হয়েছিল। অন্যান্য বছরের মতো, বিদায়ী 2020 বছর নতুন কিছু প্রত্যাশার সাথে শুরু হয়েছিল। তবে বছরের শুরুতে করোনভাইরাস মহামারীটি আঘাত হানে। এ কারণে, দেশে লকডাউন, কোথাও চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক ব্যবসা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছিল। তবে আরও ভয়াবহ ঘটনাটি হ'ল করোনার কারণে কয়েক মিলিয়ন লোক মারা গেছে।

আরো পড়ুন : বিক্রি ৩৩ লাখ, দেখাল ৩৩ হাজার

আধুনিক যুগে এমন একক সংকট নেই যা পুরো বিশ্বকে এভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। এমনকি যোগাযোগের এই যুগেও দেশগুলি একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে প্রতিটি দেশ একটি মহাদেশের মতো ছিল। মহামারীটির প্রাদুর্ভাবের এক বছর পরেও কিছু এখনও স্বাভাবিক হয় না, তবে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর উত্থান চোখকে জল দেয়।


করোন ভাইরাস মহামারীটি ২০২০ সালের একেবারে গোড়ার দিকে চীনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়ার্ল্ডমিটার্স.ইনফো করোন ভাইরাস সম্পর্কে সর্বকালের তথ্য প্রকাশ করছে। বুধবার অবধি বিশ্বব্যাপী ৮ কোটি ২০ মিলিয়নেরও বেশি লোক করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছে বলে ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে। গতকাল মৃতের সংখ্যাও ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে।


করোনার শুরুতে, সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপটি নিয়েছিল ইউরোপীয় দেশ ইতালি। দেশজুড়ে লকডাউন দিয়ে বিশ্বজুড়ে শিরোনাম করেছে দেশটি। এর আগে, চীন করোনার মহামারীর উৎসস্থল , উহন সহ পুরো হুবেই প্রদেশকে অবরুদ্ধ করেছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষকে গৃহবন্দী করা হয়েছে।


ইউরোপে ইতালির পর স্পেন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। দেশটি জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। করোনার প্রথম তরঙ্গ চলাকালীন, ইতালি এবং স্পেনের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাটি আক্ষরিক অর্থে ধসে পড়েছিল। এরপরে এই ভাইরাসটি যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর মধ্যেই সংক্রমণটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল সহ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো প্রকাশ্যে করোনার মহামারী উপেক্ষা করেছেন।

ফাইজারের ভ্যাকসিন ব্যাপক টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনার টিকা শুরু হয়েছে।

কেবল সাধারণ মানুষই নয়, রথী-মহারাথিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন  করোনা সংক্রমিত হন এবং বিশ্বের প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে যুক্তরাজ্যের।  মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো সহ আরও কয়েকটি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা করোনাকে আক্রান্ত করেছেন।


এদিকে, করোনার মহামারী শুরুর পর থেকেই কার্যকর এবং নিরাপদ ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টাটি বছরের শেষের দিকে আলোকপাত করেছে বলে মনে হয়। ২২ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী ২৩৩ টি করোনভাইরাস ভ্যাকসিন আপডেট করেছে। এর মধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে ৬১টি  ভ্যাকসিন রয়েছে। ভ্যাকসিনগুলির মধ্যে রয়েছে ফাইজার এবং মডার্ন, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা সহ-উদ্ভাবিত দুটি ভ্যাকসিন, রাশিয়ার গামালিয়া গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে স্পুতনিক-ভি ভ্যাকসিন এবং চীন থেকে সিনোভাক এবং সিনোফর্ম।

আরো পড়ুন : এসএসসি পরীক্ষা জুনে, এইচএসসি জুলাই-আগস্টে

যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস টিকা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ফাইজারের ভ্যাকসিন এগিয়ে রয়েছে। ভ্যাকসিনটি জার্মান বায়োটেকনোলজি সংস্থা বায়েনটেক সহ-স্পনসর করেছেন। যুক্তরাজ্য প্রথম ২ ডিসেম্বর ভ্যাকসিনটি অনুমোদন করে। এটি December ডিসেম্বর দেশে প্রয়োগ করা শুরু হয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এই ভ্যাকসিন চালু করা হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোটে ভ্যাকসিনের শর্তসাপেক্ষ বিপণনেরও অনুমোদন দিয়েছে। আধুনিক টিকারগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অনুমোদিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যও গতকাল অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে।



তবে অভিযোগ রয়েছে যে ধনী দেশগুলি ভ্যাকসিন কিনেছে এবং দরিদ্র দেশগুলিকে হুমকি দিয়েছে। পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স সম্প্রতি বলেছিল যে ধনী দেশগুলির মোট জনসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে তারা ভ্যাকসিনগুলির মোট চাহিদার ৫৩ শতাংশ কিনেছে। এটি প্রায় ৭০টি 

 নিম্ন-আয়ের দেশগুলিকে ১০ জনের মধ্যে ১ জনকে টিকা দিতে পারবে।


মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং দাতব্য সংস্থা অক্সফামের মতো সংস্থাগুলি নিয়ে গঠিত হয়েছে পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের নেটওয়ার্ক। জোটটি বলেছে, ধনী দেশগুলি আধুনিক ভ্যাকসিনের শতভাগ। ডোজ কিনেছে। এই দেশগুলিও ৯০ শতাংশ ফাইজার ভ্যাকসিন কিনেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা অবশ্য তাদেরকে উন্নয়নশীল বিশ্বেও ভ্যাকসিন সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্রে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিসেফ এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষক সংস্থা এয়ারফিনিটি বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি সংগ্রহ করেছে। চুক্তিগুলি বিশ্লেষণ করে নিউইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনেছে, তা জোটের লোকদের দু'বার টিকা দেওয়ার অনুমতি দেবে। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিককে ভ্যাকসিনের চারটি ডোজ দিতে পারে। কানাডা যে পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনেছে সে দেশের প্রতিটি নাগরিককে ছয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমতি দেবে।


কেবল সাধারণ মানুষই নয়, রথী-মহারাথিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সংক্রামিত বিশ্বের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো সহ আরও কয়েকটি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা করোনাকে আক্রান্ত করেছেন।



তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভাকস প্রোগ্রামের আওতায় ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সর্বশেষ সংবাদ অনুসারে, এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সংস্থা এ পর্যন্ত ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে সম্মত হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে যে কোওএক্স প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া সমস্ত ১৯০ টি দেশে ২০২১ সালের প্রথমার্ধে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

আরো পড়ুন : হুয়াওয়ের সহায়তায় তৈরি হলো লাওসের প্রথম স্মার্ট এক্সপ্রেসওয়ে

নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেছিলেন, ধনী দেশগুলির ভ্যাকসিন কেনার ঝুঁকির মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। কারণ, তারা তাদের পুরো জনগণের জন্য ভ্যাকসিন কিনছে। সেই সময়ে অন্যান্য দেশে যারা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে থাকেন তাদের তাৎক্ষণিক টিকা দেওয়ার প্রয়োজন।


খবর প্রকাশ করছে : prothomalo

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget