দুর্দান্ত বোলিংয়ে রেকর্ড বইতে ইবাদত | Ibadat in the record book of great bowling
শেষ দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাধা ছিলেন রস টেইলর। দিনের শুরুতেই কাঙ্ক্ষিত সেই উইকেট বাংলাদেশকে এনে দিলেন ইবাদত হোসেন চৌধুরি। এই ম্যাচে দলের চাওয়া যেমন পূরণ করলেন তিনি, তেমনি অবসান হলো দেশের ক্রিকেটের দীর্ঘদিনের এক অপেক্ষারও।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টের শেষ দিন সকালে টেইলরকে আউট করে ইবাদত পূর্ণ করলেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে তার প্রথম তো বটেই, প্রায় ৯ বছর ও ৪৭ টেস্ট পর টেস্টে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন বাংলাদেশের কোনো পেসার।
ইবাদত থামেননি সেখানেই। পরের ওভারেই ফিরিয়ে দেন কাইল জেমিসনকে। পরে তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান মিরাজ মিলে শেষ করে দেন নিউ জিল্যান্ড ইনিংস। ইবাদত ততক্ষণে পৌঁছে যান রেকর্ড উচ্চতায়।
৪৬ রানে ৬ উইকেট তার, দেশের বাইরে বাংলাদেশের কোনো পেসারের সেরা বোলিংয়ের রেকর্ড।
দেশ-বিদেশ মিলিয়ে তার চেয়ে ভালো বোলিং ফিগার আছে কেবল আরেকজন পেসারের। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চট্টগ্রামে ২৭ রানে ৬ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।
২০১৩ সালে এপ্রিলে জিম্বাবুয়ে সফরে পরপর দুই টেস্টে অসাধারণ সুইং বোলিংয়ের প্রদর্শনীতে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন রবিউল ইসলাম। এরপর বাংলাদেশের আর কোনো পেসার পারছিলেন না এই মাইলফলক ছুঁতে।
এই সময়টায় ৩ দফায় ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়েছেন আবু জায়েদ চৌধুরি, দুবার করে মুস্তাফিজুর রহমান ও তাসকিন আহমেদ। কিন্তু ৫ উইকেট আর হচ্ছিল না। অবশেষে ইবাদতের হাত ধরে কাটল সেই খরা।
অথচ এই টেস্টের আগে তার উইকেট ছিল ১০ টেস্টে স্রেফ ১১টি। বোলিং গড় ছিল ৮১.৫৪, ১০টির বেশি উইকেট শিকারিদের মধ্যে টেস্ট ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে গড় যা। সেই তিনিই এবার উপহার দিলেন অসাধারণ বোলিং।
ইবাদতের এই স্বপ্নযাত্রা শুরু হয় চতুর্থ দিন দ্বিতীয় সেশনে। টানা ৯ ওভারের স্পেলে ২৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। এরপর শেষ সেশনে অসাধারণ এক স্পেলে তিনি ঘুরিয়ে দেন ম্যাচের মোড়ই। ৭ বলের মধ্যে ৩ উইকেট নেন ওই স্পেলে। সব মিলিয়ে স্পেলটি ছিল ৭-৩-১৫-৩।
৪ উইকেট নিয়ে শেষ দিন শুরুর পর আরেকটি উইকেটের জন্য অপেক্ষা খুব একটা করতে হয়নি। দিনের দ্বিতীয় আর নিজের দ্বিতীয় বলেই ধরা দেয় সেই উইকেট। ভেতরে ঢোকা দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন অভিজ্ঞ টেইলরকে। ষষ্ঠ শিকার জেমিসন আউট হন শর্ট মিড উইকেটে শরিফুল ইসলামের দুর্দান্ত ক্যাচে।
বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব আগে ছিল স্রেফ ৪ জন পেসারের। সর্বোচ্চ ৪ বার নিয়েছেন শাহাদাত হোসেন, রবিউল ইসলাম ২ বার। একবার করে মঞ্জুরুল ইসলাম ও রুবেল হোসেন।
নিউ জিল্যান্ডে বাংলাদেশের কোনো পেসারের ৫ উইকেট ছিল একটি। ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে বেদম মার খেয়ে ১৬৬ রানে ৫ উইকেট নিতে পেরেছিলেন রুবেল হোসেন। ইবাদত এবার তাকে পেছনে ফেললেন অনেকটা ব্যবধানে।