করোনায় আক্রান্ত হয়ে সৌরভ গাঙ্গুলী এ মুহূর্তে কলকাতার একটি হাসপাতালে ভর্তি। আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে তাঁর স্বাস্থ্য। উপসর্গ মৃদু হলেও বিসিসিআই সভাপতিকে হাসপাতালে ভর্তি করার পেছনে হৃদ্রোগ একটা বড় ভূমিকা রেখেছে। এ বছরই শুরুতে হঠাৎ হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। বুকে বসাতে হয়েছে স্টেন্ট। প্রায় এক বছর বাদে তিনি করোনায় আক্রান্ত হলেন। তবে এবার হৃদ্রোগের পাশাপাশি ভয় ধরাচ্ছে করোনার নতুন ধরন অমিক্রন। ভারতে তো এরই মধ্যে অমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে বিপজ্জনক হারে।
সৌরভের করোনার ধরন অমিক্রন কি না, সেটি জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারই পাওয়া যাবে সেই রিপোর্ট। তবে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর, হাসপাতালে ভালোই আছেন সাবেক এ অধিনায়ক। জ্বর, কাশি কোনোটিই নেই। তবে সামান্য সর্দি আছে। শরীরে কিছুটা অস্বস্তিও বোধ করছেন।
হৃদ্রোগী হওয়ায় কোনো ঝুঁকিই নিচ্ছে না সৌরভের পরিবার। বেঙ্গালুরু থেকে সৌরভকে দেখছেন বিখ্যাত হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ দেবী শেঠি। আরেক হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞ আফতাব খানের পরামর্শও নেওয়া হচ্ছে। কলকাতার উডল্যান্ড হাসপাতালে তাঁকে ওষুধ হিসেবে দেওয়া হয়েছে মনক্লোনাল ককটেল অ্যান্টিবডি ও ডক্সিসাইক্লিন। দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সৌরভ।
বেশ কয়েক দিন ধরেই ঠান্ডা–সর্দিতে আক্রান্ত ছিলেন সৌরভ। এরপর জ্বর এলে তাঁর করোনা পরীক্ষা করা হয়। একই সঙ্গে স্ত্রী ডোনা গাঙ্গুলী আর মেয়ে সানা গাঙ্গুলীরও করোনা পরীক্ষা করা হয়। তাঁরা দুজনই অবশ্য নেগেটিভ হন। এর পরপরই উডল্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে।
এ বছরের ২ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে ট্রেডমিলে হাঁটার সময় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভূত হয় সৌরভের। হাসপাতালে নেওয়ার পর জানা যায় তাঁর হৃদ্যন্ত্রের ধমনিতে ব্লক। এরপর অ্যানজিওপ্লাস্টি করা হয়। ২০ দিনের মাথায় দ্বিতীয়বারের মতো হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। এর পর থেকেই নিয়মতান্ত্রিক জীবন কাটাচ্ছেন তিনি। তবে বিসিসিআই সভাপতি হিসেবে কর্মব্যস্ততা তো তাঁর আছেই।
কদিন আগেই খবরের শিরোনাম হয়েছিলেন বিরাট কোহলির সঙ্গে কথার লড়াইয়ে জড়িয়ে। কোহলিকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে বাদ দেওয়া নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে সৌরভ মুখ খোলেন। পরে কোহলি সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করলে কিছুটা বেকায়দাতেই পড়েন বিসিসিআই সভাপতি। অধিনায়কত্ব ইস্যুতে সৌরভের কথা বলাটা ইতিবাচক চোখে দেখেননি ভারতের সাবেক ক্রিকেটাররা। তাঁদের ভাষ্য ছিল, সৌরভ এখতিয়ারবহির্ভূত কাজ করেছেন অধিনায়কত্ব নিয়ে কথা বলে।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন অতিসংক্রামক। যদিও ভাইরাসের এই ধরনটি ডেল্টার তুলনায় দুর্বল বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
ডব্লিউএইচও জানায়, ভাইরাসের আগের ধরনগুলোতে সংক্রমিত ব্যক্তি বা টিকা নেওয়া ব্যক্তিদের সহজেই সংক্রমিত করতে পারে ওমিক্রন। তবে এতে সংক্রমণের প্রভাব অন্যান্য ধরনগুলোর তুলনায় মৃদু।
বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস জানান, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে দেখা যায় যে, করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে পুনঃসংক্রমণের হার বেশি। কিন্তু ডেল্টা ধরনের তুলনায় ওমিক্রনে অসুস্থতার মাত্রা মৃদু।
তিনি বলেন, ওমিক্রনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট উপসংহারে পৌঁছানোর আগে আমাদের আরও তথ্য জানার প্রয়োজন আছে। নতুন ধরন হওয়ায় ওমিক্রনের চারিত্রিক গঠন ও বৈশিষ্ট্য বাকি ধরনগুলোর তুলনায় অনেকটাই আলাদা। আর তাই ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া দেশগুলোকে আরও বেশি করে তথ্য সরবরাহ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
তবে এখনই ওমিক্রনের মৃদু সংক্রমণের তথ্যে আশংকামুক্ত ভাবার কোনো বিষয় নেই বলে জানিয়েছেন ডব্লিউএইচও’র মহাপরিচালক। তিনি সবাইকে শতর্ক করে বলেন, এই সময়ে যেকোনো ধরনের অসতর্কতার চড়া মূল্য দিতে হতে পারে। তাই অতি-সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
মারাত্মক পরিবর্তিত করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। প্রথম শনাক্ত হওয়ার চার সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে বুধবার (১ ডিসেম্বর) দেশটির কর্তৃপক্ষ এই তথ্য জানিয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর কমিউনিক্যাবল ডিজেসেস (এনআইসিডি) জানায় দেশটিতে বিগত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৮ হাজার ৫৬১ জন সংক্রমিত হয়েছে। দেশটিতে এখন সবচেয়ে প্রভাব বিস্তারকারী ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন।
এনআইসিডি জানিয়েছে, ওমিক্রনের প্রোফাইল এবং মহামারির প্রাথমিক তথ্যে দেখা যাচ্ছে এই ভ্যারিয়েন্টটি কিছু প্রতিরোধ ক্ষমতা এড়াতে পারে, কিন্তু প্রচলিত টিকা এখনও মারাত্মক অসুস্থতা এবং মৃত্যু থেকে সুরক্ষা দিতে পারে।
দক্ষিণ আফ্রিকান সংস্থাটি জানিয়েছে, গত মাসে জিনগতভাবে বিশ্লেষণ করা নমুনার ৭৪ শতাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এক সপ্তাহ আগে ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। যে নমুনায় প্রথম এই ভ্যারিয়েন্টটি পাওয়া যায় তা দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল গৌতেং প্রদেশ থেকে ৮ নভেম্বর সংগ্রহ করা।
গত মঙ্গলবারের তুলনায় দেশটিতে বুধবার নতুন আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে।
প্রায়শই যেমনটি হয়, চেম্বারে ঢুকতে ঢুকতে সেদিনও কিছুটা দেরিই হলো এবং প্রতিদিনই যা হয়, চেম্বারে ঢোকার পরপরই আমার চেম্বার সহকারীরা এক গোছা স্লিপ নিয়ে হাজির। বিশিষ্ট যারা এবং সেই সাথে যারা বিভিন্ন রেফারেন্সে আমার কাছে আসেন তাদের প্রত্যাশা থাকে একটু আগে-ভাগে আমার সাথে চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শটুকু সারার। যে কারণে আমার চেম্বার সহকারীদের এই চিরকুটগুলো নিয়ে দৌড়ঝাঁপ। স্লিপগুলোয় চোখ বুলিয়ে দেখলাম একজন বিশিষ্ট ব্যক্তির কজন আত্মীয় আর সাথে অনুসারী আমার সাক্ষাৎপ্রার্থী তার চিকিৎসা সংক্রান্ত পরামর্শের জন্য। তাড়াতাড়িই সুযোগ করে দিলাম তাদের।
তাদের প্রশ্ন অনেক, আছে কিছু ভ্রান্তি আর তথ্য বিভ্রাটও। পরিবারে বা নিকটজনদের মধ্যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলে আমাদের রোগীরা প্রায়ই এমনি সমস্যায় পড়েন। দীর্ঘদিন ধরে রোগী দেখার অভিজ্ঞতায় এটি আমার কাছে নতুন কিছু নয়। এক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হলো না। তবে যা বাড়তি চ্যালেঞ্জ, তা হলো আমাদের অনেক সন্মানিত রোগীর পরিবারের সদস্যদের মতোই এক্ষেত্রেও আমাদের দেশের প্রাপ্ত আধুনিক চিকিৎসাগুলো সম্বন্ধে রোগীর লোকদের ধারণা খুবই কম। তার সাথে আবার যোগ হয়েছে নানা রকম অবিশ্বাস আর সন্দেহও। বুঝতে পারলাম এই রোগীর শুভাকাঙ্ক্ষীদের সন্তুষ্ট করাটা কঠিনই হবে।
রোগী সত্তরোর্ধ্ব, লিভারে সিরোসিস ছাড়াও নানা রকম সমস্যা আছে। আছে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, আর্থারাইটিস, হৃদরোগ আর ক্রনিক কিডনি ফেইলিওরও। লিভার সিরোসিসের কারণে সাম্প্রতিক সময়ে পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণও হয়েছে। রোগীর শুভানুধ্যায়ীদের নানা প্রশ্ন। তারা জানতে চান রোগী কোন রকম স্লো পয়জনিং বা বিষক্রিয়ার শিকার হয়েছেন কি না। আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলাম বিষয়টি সেরকম নয়। কোন ওষুধ দিয়ে কিংবা স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে লিভারে আর যাই হোক সিরোসিস বাঁধানো যায় না।
বললাম বাংলাদেশে লিভার সিরোসিসের প্রধান কারণ তিনটি- হেপাটাইটিস বি ভাইরাস, ফ্যাটি লিভার আর হেপাটাইটিস সি ভাইরাস। এর মধ্যে আবার অনেকগুলো রোগ আছে যে সবের কারণে লিভারে চর্বি জমে বা ফ্যাটি লিভার হয়। এসবের মধ্যে আছে মেদ-ভুড়ি, ডায়াবেটিস, ডিজলিপিডেমিয়া বা রক্তে অতিরিক্ত চর্বি, উচ্চ রক্তচাপ, হাইপোথাইরয়েডিজম, পলিসিস্টিক ওভারি আর অ্যালকোহলিজম বা অতিরিক্ত মদ্যপান। তার মানে অবশ্য এই না যে কারও লিভারে হেপাটাইটিস বি বা সি ভাইরাস ইনফেকশন কিংবা ফ্যাটি লিভার থাকলেই তার লিভারে সিরোসিস বা ক্যানসার হয়ে যাবে। যাদের লিভারে এই সমস্যাগুলো থাকে তাদের কারও কারও, বলা যায় ২০-৩০ শতাংশ মানুষের একটা সময় লিভারে সিরোসিস রোগটা দেখা দিতে পারে। আর এদের মধ্যে আরও প্রায় ২০ শতাংশ মানুষের একটা সময় লিভারে ক্যানসারও হতে পারে।
রোগীর শুভানুধ্যায়ীরা জানতে চাইলেন এ রোগীর জন্য স্টেম সেল থেরাপি করার কোনো সুযোগ আছে নাকি। তারা প্রয়োজনে রোগীকে বিদেশে নিয়ে স্টেম সেল চিকিৎসা করিয়ে আনতে চান। এবারো তাদের আমার হতাশ করতে হলো। বুঝিয়ে বললাম যে লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় স্টেম সেল থেরাপি নিয়ে পৃথিবীর অনেক দেশে অনেক কাজ হচ্ছে। আমরাও ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসায় অটোলোগাস হেমোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্লান্টেশন করে আসছি। আমরা এরই মধ্যে এ সংক্রান্ত আমাদের অভিজ্ঞতার বিষয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক মেডিকেল জার্নালে বৈজ্ঞানিক নিবন্ধ প্রকাশ করেছি। তাছাড়া বিভিন্ন সময় দেশের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া আর অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোয় প্রকাশিত রিপোর্টগুলোর সুবাদে দেশের লিভার রোগীরাও এ বিষয়ে এখন কম-বেশি জানেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি সিন্ডিকেটের অনুমোদন নিয়ে একটি ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজি ডিভিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যাতে দেশের মানুষ আরও সহজে এই চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারে।
তাদের আরও বললাম যে আমরা যে শুধু লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় স্টেম সেলের ব্যবহার নিয়ে ঘাটাঘাটি করছি তাই নয়, পাশাপাশি আমরা বাংলাদেশে অন্যান্য রোগের চিকিৎসায়ও স্টেম সেলের প্রচলন বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এদেশে সরকারি পর্যায়ে স্টেম সেল চিকিৎসার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করা হয়েছে, যেটি প্রণয়নে আমিসহ একাধিক লিভার বিশেষজ্ঞ জড়িত ছিলাম। পাশাপাশি বাংলাদেশ স্টেম সেল অ্যান্ড রিজেনারেটিভ মেডিসিন সোসাইটির উদ্যোগে চার বছর ধরে নিয়মিতভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে স্টেমকন নামে একটি স্টেম সেল কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে দেশ-বিদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও বেসিক সাইন্টিস্টরা যোগ দেন। বাংলাদেশ স্টেম সেল চিকিৎসায় এগিয়েছে অনেক দূরই। তবে সমস্যা হচ্ছে তাদের রোগীর রোগ এত বেশি বেড়ে গেছে যে এক্ষেত্রে স্টেম সেল প্রয়োগ করে আদৌ কোনো লাভ হবে বলে আমি মনে করি না।
রোগীর লোকজন বুঝলেন কি বুঝলেন না ঠিক বুঝলাম না, তবে তাদের পরের প্রশ্নটিতে আমি বেশ চমৎকৃত হলাম। তারা টিপস আর লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের ব্যাপারে জানতে চাইলেন। অবশ্য তাদের জানায় কিছু ভুলও আছে। তাদের ধারণা আমেরিকা, ইউকে আর জার্মানির বাইরে পৃথিবীতে আর কোথাও টিপস কিংবা লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন হয় না। তারা জেনে কিছুটা অবাকই হলেন যে প্রতিবেশী ভারতেও নাকি টিপস হয় আর লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের জন্য ভারত পৃথিবীতে শীর্ষ পাঁচে আছে। সমস্যাটা সেখানে নয়। সমস্যা অন্য জায়গায় এবং সমস্যা বহুমাত্রিক। বুঝিয়ে বললাম তাদের সবই। লিভার সিরোসিসের সব রোগীর বেলায় টিপস প্রযোজ্য নয়। কারণ টিপস করার সময় হার্টের ভেতর দিয়ে লিভারকে একসেস করতে হয়। এতে কার্ডিয়াক এরিথনিয়া, পালমোনারি হাইপারটেনশন আর কার্ডিওপালমোনারি ফেইলিওর হতে পারে। পাশাপাশি ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীদেরও টিপস করা যায় না, কারণ টিপস করার সময় ডাই ব্যবহার করা হয়, যা এসব রোগীর কিডনি ফেইলিওরের কারণ হতে পারে। এতসব কিছু না থাকলেও লিভার সিরোসিসে টিপস ঝুকিপূর্ণ, কারণ টিপস করার পর রোগীদের হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি বা হেপাটিক কোমা হওয়ার ঝুঁকি খুবই বেশি।
অন্যদিকে যদি কারও লিভার আর কিডনি একসাথে খারাপ হয় তাহলে শুধু লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন করলেই চলবে না পাশাপাশি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করতে হবে কিডনিও। এজন্য প্রয়োজন দুজন রিলেটেড অর্থাৎ আত্মীয় ডোনার, যাদের সাথে রোগীর শুধু ব্লাড গ্রুপই নয় পাশাপাশি এইচএলএ ম্যাচিংও লাগবে। আর অনাত্মীয় ডোনার দিয়ে, আমার জানা মতে, ইসরায়েলসহ পৃথিবীর হাতেগোনা দু-একটি দেশ ছাড়া অন্য কোথাও লিভার বা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন করা হয় না এবং এই তালিকায় অবশ্যই ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা জার্মানি নেই। তাছাড়া এই রোগীর এত বেশি কোমরবিডিটি অর্থাৎ আনুষঙ্গিক জটিল রোগ আছে যে এক্ষেত্রে লিভার বা কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনের সুযোগও আছে বলে আমার মনে হয় না। তারা যদি আরও আগে যোগাযোগ করতেন ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন তো বটেই, এমনকি দেশেই স্টেম সেল থেরাপির মাধ্যমে হয়তো রোগীকে কিছুটা সাহায্য করা সম্ভব হতো।
লক্ষ্য করলাম, শুধু ট্রান্সপ্ল্যান্টেশনই নয়, দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা সমন্ধে তাদের ধারণা খুবই ক্ষীণ। বলা চলে তারা এক্ষেত্রে কি ঘটছে, না ঘটছে এসবের কোনো খবরই রাখেন না। যেমন- তাদের ধারণা, লিভার সিরোসিসের কারণে পরিপাকতন্ত্রে যে রক্তক্ষরণ তার চিকিৎসা এদেশে নেই। অথচ লিভার সিরোসিস রোগীদের খাদ্যনালী আর পাকস্থলিতে ভ্যারিক্স বা রক্তনালী ছিঁড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণের চিকিৎসা আমার ছাত্ররাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগে নিয়মিত করছে।
একথা, সে কথায় আরও কিছু সময় পার হলো। তারা এক সময় বিদায় নিলেন। সাম্প্রতিক সময় লিভার সিরোসিস আর এর চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহের পারদটা হঠাৎই ঊর্ধ্বমুখী। আমাদের শাস্ত্রে বৈজ্ঞানিক জার্নালে কেস রিপোর্টিংয়ের প্রচলন আছে, যাতে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা আমাদের কলিগদের সাথে শেয়ার করতে পারি। হঠাৎই মনে হলো এই কেসটা যদি বরং আর সবার সাথে শেয়ার করি তাহলে হয়তো অনেকেরই অনেক বিষয়ে ধারণাগুলো অনেকটাই স্বচ্ছ হয়ে যাবে।
গত এক বছরে বাংলাদেশে নতুন করে ৭২৯ জনের এইডস শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া এইডস রোগীর মধ্যে ২৫ শতাংশই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর।
বুধবার রাজধানীর মহাখালীতে বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ানস্ অ্যান্ড সার্জনসে (বিসিপিএস) এইডস দিবসের আলোচনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশে এখন পর্যন্ত মোট এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়ে ৮ হাজার ৭৬১ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে চিকিৎসার আওতায় আছেন ৭৭ শতাংশ রোগী।
বর্তমানে দেশে এইডস রোগী শনাক্তের হার শূন্য দশমিক শূন্য ১ শতাংশের কম। তবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণ কিছুটা বেশি। গত এক বছরে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী আছেন ১৮৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, দেশে গত ১ বছরে মোট এইচআইভি পরীক্ষা হয়েছে ৬ লাখ ২৮ হাজার ৩১২ জনের। এ ছাড়া ব্লাড স্ক্রিনিং হয়েছে আরও ৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৫৭ জনের।
এই সময়ে নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সাধারণ জনগোষ্ঠী ১৮৬ জন, রোহিঙ্গা ১৮৮ জন, বিদেশ ফেরত প্রবাসী ও তাদের পরিবারের সদস্য ১৪৪ জন, ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় মাদক গ্রহণকারী ৬১ জন, নারী যৌনকর্মী ১৭ জন, সমকামী ৬৭ জন, পুরুষ যৌনকর্মী ৫৩ জন ও উভয় লিঙ্গের ১৩ জন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া , স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব আলী নূর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম প্রমুখ।
পাইলস সবচেয়ে বেদনাদায়ক এবং জটিল রোগগুলির মধ্যে একটি। এটি মানুষের পায়খানার ধারের একটু খুব খারাপ রোগ। রোগটি পায়খানার ধারের অভ্যন্তরে বা বাইরে, এর চারপাশে বা একপাশে, এক বা একাধিক, গোল বা গোলাকৃতি বা সুচাল হয়। এই পুঁতিগুলিকে বলা হয় ‘বলি’ বা ‘গেজ’। আপনি যখন টয়লেটে যান, কিছু রক্ত অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলির অনুপাতে এই ত্যাগগুলির থেকে চলে যায়, কিছুটি স্বল্প পরিমাণে এবং কিছুটা স্বল্প পরিমাণে। আবার অনেকে রক্ত যায়। আবার অনেকের রক্ত যায়ই না। হেমোরয়েড বা পাইলসের সমস্যা দেখা যায় ঘরে ঘরে । যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট ভবনে ট্রাম্প–সমর্থকদের হামলা, নিহত 4
কেন হয় পাইলস?
কোষ্ঠকাঠিন্য, দীর্ঘমেয়াদী কাশি, মূত্রথলির অসম্পূর্ণতা, গর্ভাবস্থা মলদ্বারের ক্যান্সার এবং দীর্ঘ সময় ধরে নিয়মিত দাঁড়িয়ে থাকার সমস্যা থাকলে পাইলস হতে পারে। পাইলসের লক্ষণগুলির মধ্যে মলদ্বারে ব্যথা, রক্তপাত এবং মলদ্বার ফোলাভাব অন্তর্ভুক্ত। অন্য কথায়, অন্ত্রের গতিবিধি চলাকালীন অতিরিক্ত চাপ, জন্মগতভাবে দুর্বল ধমনী, দীর্ঘস্থায়ী কাশি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া, ভারী কাজ, অতিরিক্ত কাজ। ওজন, গর্ভাবস্থা ইত্যাদি যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে পাইলস প্রায়শই ধীরে ধীরে রক্তাল্পতা দেখা দেয়, প্রায়শই ব্যথা এবং সংক্রমণ হতে পারে। করোনার ভ্যাকসিন বাংলাদেশ এ চলে এলো
কিভাবে বুঝবেন?
মলত্যাগের সময় ব্যথাবিহীন রক্তক্ষরণ, চুলকানি বা অস্বস্তিকর জ্বলন, মলদ্বার মধ্যে ব্যথা, মলদ্বারের বাইরের অংশে ফোলাভাব বা অনুভূতি অনুভূত হওয়া বা জঞ্জাল অনুভূতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:
অন্ত্রের গতিবিধির সময় অতিরিক্ত বা অল্প পরিমাণে রক্ত যেতে পারে।
গুহ্য জ্বলে ও ফুলে যায়।
টাটানি ও ব্যথা।
অসস্তিকর অনুভুতি.
মাথা ধরা এবং মাথাব্যথা।
উরু, বুক, নাভির চারপাশে ব্যথা এবং মলদ্বারে ভারী লাগা।
কোমর ব্যথা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য
অর্শ রোগে আক্রান্তদের করণীয় :
আপনাকে নিয়মিত পায়খানা করতে হবে।
আপনালর হজমের সমস্যা থাকলে এমন খাদ্য বর্জন করুন।
এমন লক্ষণ দেখাদিলে চিকিৎসকের পরামর্শমতো বিশ্রাম নেন।
হাতুরে ডাক্তার দিয়ে বা কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসা করবেন না।
প্রতিরোধের উপায় :
আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য যাতে না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আপনার নিয়মিত ঘুমানো দরকার।
বেশি বেশি পানি পান করুন।
অতিরিক্ত পরিশ্রম করা যাবে নাহ।
খাদ্য এর সাথে বেশি করে তরকারি খান।
অধিক মশলা জাতীয় খাদ্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
পাইলসের জন্য বিভিন্ন চিকিৎসার রয়েছে। চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি সমস্যা কত গভীর তার উপরও নির্ভর করে। কখনও কখনও কেবল ওষুধই কাজ করে, কখনও কখনও সমস্যাটি এতটাই বেড়ে যায় যে অস্ত্রোপচার ব্যতীত অন্য কোনও উপায় নেই। তবে পাইলসের সমস্যার জন্য কিছু নির্দিষ্ট খাবার এবং টিপস রয়েছে যা খুব দরকারী
র্যাডিশ জুস:
মূলা একটি মূলা শাক। এই শাকটি পাইলসের সমস্যায় চরম উপকারী। এই সবজির রস খেলে আপনার উপকার হবে। প্রথমে 1/4 কাপ দিয়ে শুরু করুন। তারপরে ধীরে ধীরে পরিমাণটি 1/2 কাপ পর্যন্ত বাড়িয়ে নিন
বেদনা:
বেদানের বীজ জলে ভাল করে সিদ্ধ করে নিন। বেদানা দানা এবং জলের রঙ পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত ফুটাতে থাকুন। এই জল ছেঁকে রেখে দিন। এই পানি দিনে দুবার পান করুন।
ডুমুর:
পাইলসের সমস্যার জন্য শুকনো ডুমুর ১ গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরের দিন সকালে এই অর্ধেক পানি খেয়ে নিন। আবার বিকেলের দিকে বাকি অর্ধেক পানি খেয়ে নিন। এটাতে আপনি উপকার পাবেন।
আদা ও লেবুর রস:
পাইলসের অন্যতম কারণ হলো ডিহাইড্রেশন । ১ চামচ মধু এবং আদা ও লেবুর রস একসঙ্গে ভাল করে মিশিয়ে নিন। দিনে দুবার করে এই মিশ্রণটি জিনিস টি খান। এতে শরীর হাইড্রেট হবে এবং পাইলসের সমস্যাও ভালো হবার সম্ভাবনা থাকবে।
কাঁচা পেঁয়াজ:
যেহেতু পাইলসগুলি আপনার মলদ্বার থেকে রক্ত প্রবাহিত করে, তাই কাঁচা পেঁয়াজের সমস্যা অনেক কম, তাই খাবারের সাথে খান। এটি অন্ত্রের ব্যথা উপশম করতেও সহায়তা করে।
প্রাতঃকর্মের সময় বসার ধরণ:
জানেন অনেকসময় ভুল পদ্ধতিতে কমোড এ বসার ফলে অতিরিক্ত টয়লেট চাপের প্রয়োজন হয়। তাই অবশ্য পায়ের নিচে একটা ছোট টুল রাখুন টয়লেট বেশি চাপ না হবার জন্য। টয়লেট বসার সময় একটু সামনের দিকে ঝুঁকে বসুন। এতে বৃহদন্ত্রের কম চাপ পড়বে।
ওয়ার্কআউট:
আপনি যদি সেল লিচিংয়ের সমস্যা কমাতে এবং শরীরে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত পরিশ্রম করেন তবে আপনার শরীর এবং পাইলসের সমস্যা হ্রাস পাবে। তবে আপনি কঠোর পরিশ্রম করলে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে এবং ওজন বাড়িয়ে তোলে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে। সাঁতার বা সাইক্লিংয়ের মতো হালকা ওয়ার্কআউট করুন।
পাইলসের সমস্যা কমবে হলুদ:
কাঁচা হলুদ পানিতে ভালো করে পানিতে ফুটাবেন । এবং এই পানি নিয়মিত খাবেন । এতে পাইলসের সমস্যায় অনেকটা উপকার পাবেন আশা করা যাই।
পাইলসের সমস্যা কমবে কলা:
আপনার পায়খানা কোষা হবার সমস্যাসবচেয়ে উপকারি এবং অব্যর্থ ওষুধ হল কলা। বিনা কষ্টে মলত্যাগ করতে সাহায্য করে কলা। এর ফলে মলদ্বারে কোনও চাপ পড়ে না, ফলে পাইলসের সমস্যা বৃদ্ধি হয় না। কলা সোয়াবিনের দুধ দিয়ে খেলে আরও তাড়াতাড়ি উপকার পাওয়া যাবে।
পাইলসের সমস্যা কমবে ডাল:
পাইলসের সমস্যা কমবে মসুর ডাল, পাইলসের সমস্যা কমবে খেসারী ডাল, পাইলসের সমস্যা কমবে তিসী ডাল, এই ধরনের খাবার পাইলসের সমস্যা নিরাময়ে খুবই উপকারি।
আমাদের কথা
আপনাদের যাদের পাইলসের সমস্যা আছে। আপনারা আমাদের এই পোস্ট এর নিয়ম গুলা ফলো করলে আপনাদের সমস্যা থেকে আস্থে আস্থে মুক্ত হয়ে যাবেন। ধন্যবাদ!আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য। ভালো লাগলে আপনারা আপনাদের মূল্যবান কথা লিখে যাবেন
দ্রুত টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কম বিকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকারের উপর নির্ভরশীল। সেই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং বিতরণ সংস্থা আগামী জুনের আগে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে বলে সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন না থাকলে বাংলাদেশকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
দ্রুত টিকা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের কম বিকল্প রয়েছে। বাংলাদেশ মূলত ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের টিকারের উপর নির্ভরশীল। সেই ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সংগ্রহ এবং বিতরণ সংস্থা আগামী জুনের আগে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে বলে সম্ভাবনা কম। এই পরিস্থিতিতে এই রোগের কোনও ভ্যাকসিন না থাকলে বাংলাদেশকে জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।
একটি উৎসের উপর নির্ভর না করে পরিবর্তে সরকারকে একাধিক উৎসের সাথে চুক্তি করতে হয়েছিল।
আবু জামিল ফয়সাল, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ
ফাইজার-বায়োনেটেক এবং আধুনিক ভ্যাকসিনগুলি অনেক আগেই অনুমোদিত হয়েছে। রাশিয়া এবং চীন থেকে আসা ভ্যাকসিন একাধিক দেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিভিন্ন সংস্থা এখন কমপক্ষে ৩০টি দেশে টিকা দিচ্ছে। কিছু দেশে একাধিক সংস্থার ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি নতুন ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হতে পারে। সরকার এসব উত্স থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য কী করছে তা কেউ বলছে না।
গত তিন দিন ধরেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদার পুনাওয়ালার বক্তব্যকে ঘিরে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা ছিল। তবে তিনি মঙ্গলবার একটি টুইট বার্তায় বলেছেন যে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিনগুলি সমস্ত দেশে রফতানি করার অনুমতি রয়েছে।
ভারতে ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণের আগে বাণিজ্যিকভাবে অন্য দেশকে টিকা না দেওয়ার বিষয়ে পুনাওয়ালার কিছু বক্তব্যকে ঘিরে বিভ্রান্তি রয়েছে। রয়টার্স পুনাওয়ালাকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে তারা আগামী দুই মাসের মধ্যে ভারতের ভ্যাকসিনের চাহিদা পূরণ করবে। প্রাথমিকভাবে ভারত সরকারকে ১০০ মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের পরেই ভ্যাকসিনগুলি রফতানি করা সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে টিকা দেওয়া হবে। সিরাম বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে টিকা দেবে। প্রথমে ৫০ লক্ষ টিকা দেওয়া হবে। পরে সর্বমোট ৩ কোটি টিকা ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি করেছে। বাংলাদেশ সরকার শ্রীরাম ইনস্টিটিউট থেকে ভ্যাকসিন কিনছে। এই ভ্যাকসিনটি বেক্সিমকো ফার্মা সরবরাহ করবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই চুক্তিটি দুই সরকারের মধ্যে বা বাণিজ্যিক মধ্যে রয়েছে কিনা তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়।
এ সময় স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ক সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেছিলেন যে এটি দুটি সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি। বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, এটি একটি বাণিজ্যিক চুক্তি ছিল। তবে গতকাল সারাদিন এই বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনও বিবৃতি শোনা যায়নি।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, বেক্সিমকো ফার্মা এবং সেরাম ইনস্টিটিউটের মধ্যে চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ও ভারত একই সময়ে টিকা দেওয়া হবে। সিরাম বাংলাদেশ ভ্যাকসিনের অনুমোদনের এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে টিকা দেবে। প্রথমে ৫০ লক্ষ টিকা দেওয়া হবে। পরে সর্বমোট ৩ কোটি টাকার ভ্যাকসিন দিতে হয় প্রতি মাসে ৫০ লাখ টিকা। বেক্সিমকো সেই টিকা দেশের জেলা পর্যায়ে পৌঁছে দেবে। একজন সিনিয়র স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, বেক্সিমকোর ভূমিকা মূলত একজন পরিবেশকের।
বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান গত সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেছিলেন, "আমরা ইতিমধ্যে সেরামের ভ্যাকসিন বুক করে দিয়েছি। আমরা তা পেয়ে যাব। একবার বা দু'টি আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে, সরকার যেদিন চাইবে সেদিন ভ্যাকসিন আনতে সক্ষম হব। চিন্তার কিছু নেই।
কোভাকস উদ্যোগ
সেরামের বিকল্প হিসাবে সরকারের কোভ্যাক্স উদ্যোগ রয়েছে। তবে আগামী ছয় মাসের আগে সেখান থেকে টিকা দেওয়ার সম্ভাবনা কম ইউনিসেফ এবং বিশ্বব্যাংকসহ উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ভ্যাকসিন নির্মাতারা করোনার ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ করার জন্য কোভাক্স নামে একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এটির নেতৃত্বাধীন সিইপিআই, গাভি এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
কোভ্যাক্স থেকে টিকা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করা হয়েছে। কোভাক্স ভ্যাকসিনটি জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও অন্যান্য ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা চলছে।
ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বলছে যে ১৯০ টি দেশ কোভ্যাক্সের উদ্যোগে যোগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৯২ টি স্বল্পোন্নত ও মধ্যম আয়ের দেশগুলি ২০২১ সালের প্রথমার্ধে কমপক্ষে ১৩০ কোটি টাকা পাবে। এর মাধ্যমে দেশগুলি তাদের ২০ শতাংশ মানুষকে টিকা দিতে সক্ষম হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম গতকাল বলেছিলেন যে কোভাক্স থেকে ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করা হয়েছে। কোভাকস ভ্যাকসিনটি জুনের মাঝামাঝি সময়ে পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও অন্যান্য ভ্যাকসিন কেনার চেষ্টা চলছে। "আগামী কয়েক মাসের মধ্যে আরও কয়েকটি ভ্যাকসিন অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে," তিনি বলেছিলেন। ভ্যাকসিন কিনতে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। তাই টিকা দেওয়ার বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই।
সরকারের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা বলছেন যে তারা সম্ভাব্য সকল উৎস থেকে ভ্যাকসিনটি পাওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগে রাশিয়ার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন কেনার কথা ছিল। রাশিয়ার স্পুটনিক -৫ টিকার জন্য প্রতি ১০ ডলার লাগবে বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক একাধিক বৈঠকে বলেছেন, চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ভারত যে কোনও দেশ থেকে এই ভ্যাকসিন আনার চেষ্টা করবে।
তবে এই কার্যক্রমগুলি এখনও পরিষ্কার নয়। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের আরও বিকল্পের সন্ধান করা উচিত ছিল। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আবু জামিল ফয়সাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন যে একটি উত্সের উপর নির্ভর না করে সরকারকে একাধিক উত্সের সাথে চুক্তি করতে হয়েছিল। আরেকটি বিকল্প বাংলাদেশের জন্য উন্মুক্ত হত যদি চীনা সংস্থা সিএনভ্যাকের সাথে চুক্তিতে টিকার পরীক্ষা করার উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই কূটনীতি জোরদার করতে হয়েছিল। অন্যদিকে, কোভ্যাক্স থেকে দ্রুত আরও বেশি ভ্যাকসিন আনতে সরকারের উচিত বিশেষ মনোযোগ দেওয়া।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তদন্ত দলকে ঢুকতে দিচ্ছে না চীন
করোনাভাইরাসের উৎস তদন্তকারী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। এই ঘটনায় হতাশ হলেন ডাব্লুএইচওর প্রধান টেড্রোস আধানোম গেব্রেয়াসুস। গার্ডিয়ান মঙ্গলবার এই তথ্য জানিয়েছে। চীনা কর্মকর্তাদের মতে, ডব্লিউএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের সদস্যদের জন্য ভিসা এখনও অনুমোদিত হয়নি। সুতরাং তারা সেই দেশে আসতে পারে না। তবে ডাব্লুএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের কিছু সদস্য ইতোমধ্যে চীনের উহান যাত্রা শুরু করেছেন।
বিশেষজ্ঞদের একটি দলকে চীনে প্রবেশ করতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন ডাব্লুএইচওর মহাপরিচালক। তিনি ডাব্লুএইচও প্রতিনিধিদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য চীনকেও আহ্বান জানিয়েছেন।
টেড্রোস অ্যাধনম জেরিবাসাস বলেছেন, ডাব্লুএইচওর বিশেষজ্ঞ দলের দুই সদস্য ইতিমধ্যে তাদের যাত্রা শুরু করেছেন। অন্যরা শেষ মুহুর্তে ট্যুর করতে পারছেন না। এই খবরে তিনি খুব হতাশ। ডব্লিউএইচও প্রধান জানিয়েছেন যে তিনি চীনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে মিশনটি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য একটি অগ্রাধিকার।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে, ডব্লুএইচও জানিয়েছিল, করোনার উদ্ভব সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য ১০ জন আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীর একটি দল ২০২১ সালে চীনা শহর উহান সফর করবে। এরপর এই উদ্যোগকে বেইজিং স্বাগত জানায়। তবে এখন তারা ডাব্লুএইচও বিশেষজ্ঞ দলকে দেশে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।
বিজ্ঞানীরা বলেছেন অপরাধী কে খেঁজে বের করা নয়। আমরা দেখতে চাই আসলে করোনা ভাইরাস কথা। এন্ড কিভাবে উৎপত্তি হলো তা জানার জন্য । এবং কিভাবে মানুষের মধ্যে ছড়ালো তা সম্পূর্ণ ভাবে জানার জন্য আমরা এই কাজ টি করতে চাই। এবং জেনে ভবিষ্যতে সংক্রমণের উপায় বের করতে চাই।
ডিসেম্বর ২০১৯ সালে, প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়টি চিনের উহান শহরে সনাক্ত করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে মহামারীটি বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়ে।
করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে গেলেন জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার
করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে শেষ পর্যন্ত হেরে গেলেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ফুটবলার ও ফুটবল প্রশিক্ষক সাফিনুর রহমান সম্রাট (৫৬)। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে বগুড়ার আলতাফুন্নেসা খেলার মাঠে জানাজার পরে সন্ধ্যায় গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ী গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
সাফিনুর রহমান বগুড়া শহরের নারুলি এলাকায় থাকতেন। তিনি ফুসফুস সহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। তার স্ত্রী সুরাইয়া আক্তার জানান, সাফিনুর কয়েকমাস আগে করোনভাইরাসকে চুক্তিবদ্ধ করেছিলেন। ফুসফুসে জটিলতার কারণে তাকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। প্রায় দেড় মাস সেখানে তাকে চিকিত্সা করার পরে সপ্তাহখানেক আগে
বছর কয়েক আগে ট্যাক্স থেকে মুক্তি পান। তবে তিনি করোনার পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও এই কারণেই তিনি হাসপাতালটি ছেড়েছিলেন, তিনি ঢাকাতেই চিকিৎসার জন্য থাকছিলেন। বুধবার রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসিএনসেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বছর কয়েক আগে ট্যাক্স থেকে মুক্তি পান। তবে তিনি করোনার পরে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন। যদিও এই কারণেই তিনি হাসপাতালটি ছেড়েছিলেন, তিনি ঢাকাতেই চিকিৎসার জন্য থাকছিলেন। বুধবার রাতে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে তাকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসিএনসেস অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বগুড়া জেলা ক্রীড়া সংস্থার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, সাফিনুর রহমান ১৯৮৬-৮৯ সাল পর্যন্ত জাতীয় ফুটবল দলের আক্রমণকারী খেলোয়াড় ছিলেন। তিনি 1989 এশিয়া কাপে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে খেলেছিলেন। মোহামেডান ছাড়াও তিনি ব্রাদার্স ইউনিয়নের অধিনায়ক ছিলেন। তিনি আরও বলেছিলেন যে, আরামবাগ ক্রিড়া চক্র, পিডাব্লুডি, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সহ রাজধানীর বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে খেলেছে। খেলা থেকে অবসর নেওয়ার পর তিনি ফুটবল কোচের পেশা বেছে নিয়েছিলেন। বগুড়া ছাড়াও সাফিনুর ঢাকার বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন।
বগুড়ার কাহালু উপজেলায় একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার দুপুর ১২ টার দিকে বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়কে কাহালু উপজেলার দারগাহাট এলাকায় একটি পাটকলের কাছে নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে ধাক্কা লেগে একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে যায়। যাত্রীবাহী বাসটি পেঁচানো হয়েছিল। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের যাত্রী ফাহিমা বেগম (৪০) নিহত হন। ফাহিমা জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার বানিয়াচাপার গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে জয়পুরহাটের ফুলদিঘি বাজারের দিকে শাকিব পরিবহনের একটি বাস কয়েক যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল। বগুড়া-নওগাঁ মহাসড়কের কাহালু উপজেলার দরগাহাট এলাকায় নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে বাসের সংঘর্ষ হয় এবং উল্টে যায়। বাঁকানো বাসের ভিতরে কয়েকজন যাত্রী আটকা পড়েছিল। এ সময় বাসের যাত্রী ফাহিমা পিষ্ট হয়ে মারা যান। আহত কয়েকজন যাত্রীকেও উদ্ধার করা হয়েছে। আহত যাত্রীদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, মহাসড়কে নির্মাণাধীন একটি কালভার্টের সাথে সংঘর্ষের পরে যাত্রীবাহী বাসটি উল্টে যায়। ফাহিমা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লুএইচও) এর মহাপরিচালক টেড্রোস অ্যাধনম জেব্রেয়াসাস দেশগুলিকে করোনভাইরাস ভ্যাকসিনগুলির সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। বুধবার ডাব্লুএইচওর প্রধান এক ভিডিও বার্তায় এই আহ্বান জানিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এই তথ্য জানিয়েছে। চীনে প্রথম করোনভাইরাস সনাক্তকরণের এক দিন পূর্বে টেড্রস আধানম জেব্রিয়াস একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন।
ভিডিও বার্তায় ডাব্লুএইচওর মহাপরিচালক কেবল ধনী দেশেই নয়, সারা বিশ্ব জুড়ে ঝুঁকিতে থাকা লোকদের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন। কোদাক্স উদ্যোগের মাধ্যমে টেড্রস অ্যাধনম জেব্রিয়াসস বিশ্বের ৪ বিলিয়ন ডলার নিম্ন ও মধ্য-আয়ের দেশগুলির জন্য ভ্যাকসিন কেনার আবেদন করেছে। "নতুন বছরে এই চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমাদের কথা বলতে হবে," তিনি বলেছিলেন।
কোভ্যাক্স উদ্যোগের লক্ষ্য ধনী বা দরিদ্র দেশ নির্বিশেষে করোনার ভ্যাকসিনগুলির সুষ্ঠু বিতরণ নিশ্চিত করা। কোভাক্স - কোভিড -১৯ ভ্যাকসিনস গ্লোবাল অ্যাক্সেস সুবিধা কোভাকস একটি যৌথ আন্তর্জাতিক উদ্যোগ। এই উদ্যোগের নেতৃত্বে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, মহামারী প্রস্তুতি ইনোভেশনস (সিইপিআই) কোয়ালিশন এবং ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (সিইপআই) যৌথভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে।
কোভাক্স উদ্যোগের লক্ষ্য ২০২১ সালের মধ্যে বিশ্বে ২০০ মিলিয়ন ডোজ নিরাপদ এবং কার্যকর ভ্যাকসিন সরবরাহ করা। ডাব্লুএইচওর প্রধান জানিয়েছেন, ভ্যাকসিনটি করোনার মহামারী রোধে দুর্দান্ত আশা প্রদান করছে। তবে বিশ্বকে সুরক্ষিত করার জন্য, এটি অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে যে কোনও জায়গায় ঝুঁকিতে থাকা সমস্ত লোককে করের বিরুদ্ধে টিকা দেওয়া হচ্ছে। যেসব দেশে ভ্যাকসিন কেনার ক্ষমতা রয়েছে তাদের কেবল সেখানে টিকা দেওয়ার দরকার নেই।
এ পর্যন্ত পাঁচটি ভ্যাকসিন বিভিন্ন দেশে ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত হয়েছে। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনিকা ভ্যাকসিনটি গতকাল যুক্তরাজ্যে, দুটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে এবং একটি রাশিয়া ও চীনে অনুমোদিত হয়েছিল। অন্যান্য বছরের মতো, বিদায়ী 2020 বছর নতুন কিছু প্রত্যাশার সাথে শুরু হয়েছিল। তবে বছরের শুরুতে করোনভাইরাস মহামারীটি আঘাত হানে। এ কারণে, দেশে লকডাউন, কোথাও চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। অর্থনৈতিক মন্দায় অনেক ব্যবসা দেউলিয়া হয়ে পড়েছে। অনেক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছিল। তবে আরও ভয়াবহ ঘটনাটি হ'ল করোনার কারণে কয়েক মিলিয়ন লোক মারা গেছে।
আধুনিক যুগে এমন একক সংকট নেই যা পুরো বিশ্বকে এভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। এমনকি যোগাযোগের এই যুগেও দেশগুলি একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে প্রতিটি দেশ একটি মহাদেশের মতো ছিল। মহামারীটির প্রাদুর্ভাবের এক বছর পরেও কিছু এখনও স্বাভাবিক হয় না, তবে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর উত্থান চোখকে জল দেয়।
করোন ভাইরাস মহামারীটি ২০২০ সালের একেবারে গোড়ার দিকে চীনের উহান থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ওয়ার্ল্ডমিটার্স.ইনফো করোন ভাইরাস সম্পর্কে সর্বকালের তথ্য প্রকাশ করছে। বুধবার অবধি বিশ্বব্যাপী ৮ কোটি ২০ মিলিয়নেরও বেশি লোক করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হয়েছে বলে ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে। গতকাল মৃতের সংখ্যাও ১৮ লাখ ছাড়িয়েছে।
করোনার শুরুতে, সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপটি নিয়েছিল ইউরোপীয় দেশ ইতালি। দেশজুড়ে লকডাউন দিয়ে বিশ্বজুড়ে শিরোনাম করেছে দেশটি। এর আগে, চীন করোনার মহামারীর উৎসস্থল , উহন সহ পুরো হুবেই প্রদেশকে অবরুদ্ধ করেছিল। লক্ষ লক্ষ মানুষকে গৃহবন্দী করা হয়েছে।
ইউরোপে ইতালির পর স্পেন কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছিল। দেশটি জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। করোনার প্রথম তরঙ্গ চলাকালীন, ইতালি এবং স্পেনের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাটি আক্ষরিক অর্থে ধসে পড়েছিল। এরপরে এই ভাইরাসটি যুক্তরাজ্য এবং জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এর মধ্যেই সংক্রমণটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ব্রাজিল সহ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো প্রকাশ্যে করোনার মহামারী উপেক্ষা করেছেন।
ফাইজারের ভ্যাকসিন ব্যাপক টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি দেশে করোনার টিকা শুরু হয়েছে।
কেবল সাধারণ মানুষই নয়, রথী-মহারাথিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন করোনা সংক্রমিত হন এবং বিশ্বের প্রথম সরকারপ্রধান হিসেবে যুক্তরাজ্যের। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো সহ আরও কয়েকটি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা করোনাকে আক্রান্ত করেছেন।
এদিকে, করোনার মহামারী শুরুর পর থেকেই কার্যকর এবং নিরাপদ ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টাটি বছরের শেষের দিকে আলোকপাত করেছে বলে মনে হয়। ২২ শে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী ২৩৩ টি করোনভাইরাস ভ্যাকসিন আপডেট করেছে। এর মধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে ৬১টি ভ্যাকসিন রয়েছে। ভ্যাকসিনগুলির মধ্যে রয়েছে ফাইজার এবং মডার্ন, যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা সহ-উদ্ভাবিত দুটি ভ্যাকসিন, রাশিয়ার গামালিয়া গবেষণা ইনস্টিটিউট থেকে স্পুতনিক-ভি ভ্যাকসিন এবং চীন থেকে সিনোভাক এবং সিনোফর্ম।
যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং সৌদি আরব সহ বেশ কয়েকটি দেশে ইতিমধ্যে করোনাভাইরাস টিকা শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে ফাইজারের ভ্যাকসিন এগিয়ে রয়েছে। ভ্যাকসিনটি জার্মান বায়োটেকনোলজি সংস্থা বায়েনটেক সহ-স্পনসর করেছেন। যুক্তরাজ্য প্রথম ২ ডিসেম্বর ভ্যাকসিনটি অনুমোদন করে। এটি December ডিসেম্বর দেশে প্রয়োগ করা শুরু হয়েছিল কয়েক দিনের মধ্যেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে এই ভ্যাকসিন চালু করা হয়েছিল। ইউরোপীয় ইউনিয়ন জোটে ভ্যাকসিনের শর্তসাপেক্ষ বিপণনেরও অনুমোদন দিয়েছে। আধুনিক টিকারগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও অনুমোদিত হয়েছে। যুক্তরাজ্যও গতকাল অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে।
তবে অভিযোগ রয়েছে যে ধনী দেশগুলি ভ্যাকসিন কিনেছে এবং দরিদ্র দেশগুলিকে হুমকি দিয়েছে। পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স সম্প্রতি বলেছিল যে ধনী দেশগুলির মোট জনসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে তারা ভ্যাকসিনগুলির মোট চাহিদার ৫৩ শতাংশ কিনেছে। এটি প্রায় ৭০টি
নিম্ন-আয়ের দেশগুলিকে ১০ জনের মধ্যে ১ জনকে টিকা দিতে পারবে।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং দাতব্য সংস্থা অক্সফামের মতো সংস্থাগুলি নিয়ে গঠিত হয়েছে পিপলস ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের নেটওয়ার্ক। জোটটি বলেছে, ধনী দেশগুলি আধুনিক ভ্যাকসিনের শতভাগ। ডোজ কিনেছে। এই দেশগুলিও ৯০ শতাংশ ফাইজার ভ্যাকসিন কিনেছে। অ্যাস্ট্রাজেনেকা অবশ্য তাদেরকে উন্নয়নশীল বিশ্বেও ভ্যাকসিন সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে ডিউক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিসেফ এবং বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষক সংস্থা এয়ারফিনিটি বিভিন্ন দেশ থেকে ভ্যাকসিন কেনার চুক্তি সংগ্রহ করেছে। চুক্তিগুলি বিশ্লেষণ করে নিউইয়র্ক টাইমসের সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনেছে, তা জোটের লোকদের দু'বার টিকা দেওয়ার অনুমতি দেবে। যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিককে ভ্যাকসিনের চারটি ডোজ দিতে পারে। কানাডা যে পরিমাণ ভ্যাকসিন কিনেছে সে দেশের প্রতিটি নাগরিককে ছয় ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমতি দেবে।
কেবল সাধারণ মানুষই নয়, রথী-মহারাথিও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন সংক্রামিত বিশ্বের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি জায়ের বলসোনারো সহ আরও কয়েকটি সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা করোনাকে আক্রান্ত করেছেন।
তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোভাকস প্রোগ্রামের আওতায় ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করছে। সর্বশেষ সংবাদ অনুসারে, এই কর্মসূচির আওতায় বিভিন্ন সংস্থা এ পর্যন্ত ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন কিনতে সম্মত হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে যে কোওএক্স প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া সমস্ত ১৯০ টি দেশে ২০২১ সালের প্রথমার্ধে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
নিউইয়র্ক টাইমসের মতে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সিনিয়র উপদেষ্টা ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেছিলেন, ধনী দেশগুলির ভ্যাকসিন কেনার ঝুঁকির মারাত্মক পরিণতি হতে পারে। কারণ, তারা তাদের পুরো জনগণের জন্য ভ্যাকসিন কিনছে। সেই সময়ে অন্যান্য দেশে যারা সংক্রমণের ঝুঁকি নিয়ে থাকেন তাদের তাৎক্ষণিক টিকা দেওয়ার প্রয়োজন।