গ্রাহক ঠকানোর অভিযোগে আলোচিত ই-কমার্স কোম্পানি ইভ্যালির বিরুদ্ধে এক ক্রেতার করা মামলায় আসামি করা হয়েছে গায়ক তাহসান খান এবং অভিনয় শিল্পী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা ও শবনম ফারিয়াকে।
সাদ স্যাম রহমান নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ইভ্যালির এক গ্রাহক হিসেবে পরিচয় দিয়ে গত ৪ ডিসেম্বর ঢাকার ধানমণ্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
ধানমণ্ডি থানার ওসি মোহাম্মদ ইকরাম আলী জানান, মামলার নয় আসামির মধ্যে ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল, তার স্ত্রী ও কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ছাড়াও আকাশ, আরিফ, তাহের ও মো. আবু তাইশ কায়েসের নাম রয়েছে।
মামলার বাদী সাদ স্যাম রহমানের অভিযোগ, ‘প্রতারণার মাধ্যমে’ তার কাছ থেকে তিন লাখ ১৮ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন মামলার আসামিরা।
ওসি বলেন, “তাহসান, মিথিলা ও শবনম ফারিয়া ইভ্যালির সাথে যুক্ত ছিলেন। তাদের উপস্থিতি ও তাদের প্রমোশনাল কথাবার্তায় প্রলুব্ধ হয়েই ওই কোম্পানিতে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন বাদী।”
গত মার্চে ইভ্যালির পণ্যদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন সংগীতশিল্পী ও অভিনেতা তাহসান রহমান খান। পরে গ্রাহকদের অসন্তোষ নিয়ে নানা খবরের মধ্যে তিনি ওই চুক্তি বাতিল করার কথা জানান।
ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হওয়ার পর শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তিবদ্ধ থাকা অভিনেত্রী মিথিলাও চুক্তি বাতিলের খবর দিয়েছিলেন। আর ওই ই কমার্স কোম্পানির জনসংযোগ কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা শবনম ফারিয়া চাকরি ছাড়ার কথা জানিয়েছিলেন।
শবনম ফারিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, ধানমণ্ডি থানার মামলায় তাকে আসামি করার বিষয়টি তার জানা নেই। আর তাহসান ও মিথিলার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাদের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গাড়ি, মোটরসাইকেল, গৃহস্থালির আসবাবপত্র, স্মার্ট টিভি, ফ্রিজ, এসি, ওয়াশিং মেশিনসহ বিভিন্ন বিলাসী পণ্য অর্ধেক দামে বিক্রির প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের নজরে এসেছিল ইভ্যালি।
তাদের চমকদার ‘অফারের’ প্রলোভনে অনেকেই বিপুল অংকের টাকা অগ্রিম দিয়ে পণ্যের অর্ডার করেছিলেন পরে বেশি দামে বিক্রি করে ভালো লাভ করার আশায়।
কিন্তু তাদের অনেকে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পণ্য বুঝে পাননি, ইভ্যালি অগ্রিম হিসেবে নেওয়া তাদের টাকাও ফেরত দেয়নি। এভাবে প্রলোভনে পড়ে ব্যাংক ঋণ, ধার-দেনা করে, জমি বা গয়না বেচে সেই টাকা ইভ্যালিতে লগ্নি করে এখন মহাবিপদে আছেন বহু গ্রাহক।
ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রাসেল এবং তার স্ত্রী কোম্পানির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে ইতোমধ্যে গ্রাহকের করা প্রতারণার মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধানমণ্ডির নতুন মামলাতেও তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
তিনি বলেন, “বাকি সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন